Kashmir: জঙ্গিদের গুলিতে হত্যা আরও ২! ভিন রাজ্যের থেকে আসা প্রত্যেককে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরানোর নির্দেশ
Civilians killed in Kashmir: এই নিয়ে চলতি মাসে কাশ্মীরে ১১ জন সাধারণ নাগরিককে হত্যা করল জঙ্গিরা।
শ্রীনগর : সমস্ত সাধারণ নাগরিক, যাঁরা এখন কাশ্মীরে রয়েছেন, অথচ সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা নন, তাঁদের যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। দুই সাধারণ নাগরিককে জঙ্গিরা গুলি করে হত্যার পর পরই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুজনেই ভিন রাজ্যের বাসিন্দা। এই নিয়ে চলতি মাসে কাশ্মীরে ১১ জন সাধারণ নাগরিককে হত্যা করল জঙ্গিরা। ঘটনার পর ভিন রাজ্য থেকে আসা প্রত্যেক সাধারণ নাগরিককে নিকটবর্তী থানায় নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে। যদি কাছাকাছির মধ্যে সিএপিএফ (CAPF) কিংবা সেনা (Indian Army) ছাউনি থাকে, তাহলে সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, বোঝাই যাচ্ছে আর নতুন করে কোনও প্রাণহানি চাইছেন না নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর কর্তারা। সেই কারণেই, যত দ্রুত সম্ভব এই ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উপত্যকার শান্তি পরিস্থিতি বার বার বিঘ্নিত করছে জঙ্গিরা। এখন জঙ্গিদের লড়াই শুধু নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর সঙ্গে নয়। উপত্যকার সাধারণ নাগরিকদের এবার নিশানা করছে জঙ্গিরা। আজ আরও দুই নাগরিককে গুলি করে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। ওই দু’জন কাশ্মীরের স্থানীয় বাসিন্দা নন। বাইরের রাজ্য থেকে কাজ করতে কাশ্মীরে গিয়েছিলেন। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হল না। জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারালেন তাঁরা।
#Terrorists fired indiscriminately upon #NonLocal labourers at Wanpoh area of #Kulgam. In this #terror incident, 02 non-locals were killed and 01 injured. Police & SFs cordoned off the area. Further details shall follow. @JmuKmrPolice
— Kashmir Zone Police (@KashmirPolice) October 17, 2021
আজ উপত্যকার কুলগাম জেলার ওয়ানপোহ এলাকায় তাঁদের গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। জঙ্গিদের গুলিতে জখম হয়েছেন আরও এক শ্রমিক। তিনিও ভিন রাজ্য থেকে কাজ করতে কাশ্মীরে গিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, গতকালই বিহারের এক ফুচকা বিক্রেতা এবং উত্তর প্রদেশের এক ছুতোর মিস্ত্রিকে গুলি করে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা। বিহারের ওই ছুতোর মিস্ত্রির নাম ছিল অরবিন্দ কুমার শাহ। তাঁকে শ্রীনগরে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা। আর উত্তর প্রদেশের কাঠের মিস্ত্রি শাগির আহমেদকে পুলওয়ামায় হত্যা করেছিল জঙ্গিরা।
উল্লেখ্য, গতকালের ওই নারকীয়, বর্বরোচিত ঘটনার তীব্র নিন্দা করে টুইট করেছেন জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। লিখেছেন, ‘একজন ফুচকা বিক্রেতাকে গুলি করে মারার তীব্র বিরোধিতা করছি। সাধারণ নিরপরাধ মানুষকে খুনের আরও একটি ঘটনা ঘটল। এই অরবিন্দ কুমাররা পেটের দায়ে শ্রীনগরে আসেন। তাঁদের যদি প্রাণ যায় তা অত্যন্ত অনুশোচনার, অনুতাপের বিষয়।’
নিরপরাধ সাধারণ মানুষকে মেরে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করাই সন্ত্রাসবাদের মূল লক্ষ্য। সবসময় যে তাতে সাফল্য আসে তেমন নয়। তবে এও ঠিক, বহু সময় নিরপরাধ মানুষের প্রাণ যায় এই পৈশাচিক খেলায়। পর পর দু’দিনে উপত্যকায় চার সাধারণ নাগরিকের প্রাণ নিল জঙ্গিরা। এই নিয়ে চলতি মাসে মোট ১১ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে উপত্যকায় এখন নয়া আতঙ্কের নাম, হরকত ৩১৩। ভারতীয় গোয়েন্দাদের দাবি, গত কয়েক দিন ধরে ভূস্বর্গে যে কায়দায় হামলা হচ্ছে, তার নেপথ্যে রয়েছে নতুন কোনও গোষ্ঠী। গোয়েন্দারা বলছেন, এই গোষ্ঠীর নাম হরকত ৩১৩ (Harkat 313)। যা আদতে ব্রিগেড ৩১৩-র নতুন সংস্করণ।
এই জঙ্গি গোষ্ঠী সরাসরি হক্কানি গোষ্ঠীর সদর দফতর মিরানশাহ থেকেই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। তবে জঙ্গি গোষ্ঠীর মাথা পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ইলিয়াস কাশ্মীরি। এই গোটা জঙ্গি সংগঠনই পাকিস্তানের আইএসআইয়ের চক্রান্তে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে তালিবানের মাধ্যমে। মূলত, ভারতীয় সেনাদের ব্যস্ত রেখে এ দেশে জইশের জঙ্গি ঢোকানোই হরকত ৩১৩-র উদ্দেশ্য। এমনটাই অনুমান করছেন গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন : Jammu and Kashmir: জইশ জঙ্গিদের এ দেশে ঢোকাতেই ভূস্বর্গে নতুন কায়দায় হামলা? উদ্বেগ বাড়াচ্ছে হরকত ৩১৩