মাছ ধরতে গিয়ে জেলেরা পেলেন ২৮ কিলো বমি, প্রতি কেজির দাম ১ কোটি!

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Jul 23, 2022 | 8:23 PM

কেরলের একদল মৎস্যজীবী সমুদ্র থেকে পেলেন ২৮ কেজি 'বমি'। এর প্রতি কেজি বিক্রি হয় ১ কোটি টাকায়। তবে, তারা সেটা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছে।

মাছ ধরতে গিয়ে জেলেরা পেলেন ২৮ কিলো বমি, প্রতি কেজির দাম ১ কোটি!
প্রতীকী ছবি

Follow Us

তিরুঅনন্তপুরম: কেরলের তিরুঅনন্তপুরম শহরের কাছের ভিঝিনজামে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন একদল মৎসজীবী। মাছের বদলে সমুদ্র থেকে তাঁরা পেলেন একতাল ‘বমি’, যার ওজন ২৮.৪০০ কিলোগ্রাম। শুক্রবার সন্ধ্যায় তীরে এসেই অবশ্য তাঁরা সেই ‘বমি’ তুলে দিয়েছে উপকূলীয় পুলিশের হাতে। আর এই কাজের জন্য কর্তৃপক্ষ তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। কারণ, ওই ‘বমি’ বিক্রি করার লোভ সামলানো খুব সহজ নয়। ওই বমি তো যে সে বমি নয়, বমিটি তিমি মাছের। যা ‘অ্যাম্বারগ্রিস’ নামেই বেশি পরিচিত। আর ওই মৎসজীবীরা যে পরিমাণ অ্যাম্বারগ্রিস পেয়েছিলেন, তার বাজারমূল্য ২৮ কোটি টাকা!

শনিবার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে উপকূলীয় পুলিশ বলেছে, ভিঝিনজামের কয়েকজন মৎসজীবী আমাদের অ্যাম্বারগ্রিস হস্তান্তর করেছে। আমরা তারপর বন বিভাগকে জানাই। তারা আমাদের কাছ থেকে সেটা নিয়ে গিয়েছে।’ উপকূলীয় পুলিশের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, মৎসজীবীদের পাওয়া জিনিসটি সত্য়ি সত্যি তিমি মাছের বমি, অর্থাৎ অ্যাম্বারগ্রিস কি না, তা নিশ্চিত করার জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে অ্যাম্বারগ্রিসটিকে শহরের ‘রাজীব গান্ধী সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি’ বা ‘আরজিসিবি’-তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সুগন্ধি তৈরিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয় এই অ্যাম্বারগ্রিস। সুগন্ধি শিল্পের এক সূত্র জানিয়েছে, প্রতি কেজি অ্যাম্বারগ্রিস আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় ১ কোটি টাকায় বিক্রি হয়। তবে, অ্যাম্বারগ্রিস বিক্রি করা আইনত নিষিদ্ধ। কারণ, স্পার্ম হোয়েল, অর্থাৎ, শুক্রাণুর মতো দেখতে তিমি, একটি বিপন্ন প্রজাতি। ভারতের বন্যপ্রাণ সুরক্ষা আইনের অধীনে এই প্রজাতি সুরক্ষিত। আইন লঙ্ঘন করলে শাস্তিরও বিধান রয়েছে।

কীভাবে তৈরি হয় এই বহুমূল্য অ্যাম্বারগ্রিস? বিশ্বের অত্যদ্ভুত প্রাকৃতিক ঘটনাগুলির মধ্যে অন্যতম হিসেবে ধরা হয় অ্যাম্বারগ্রিসকে। স্পার্ম হোয়েল বা শুক্রাণুর মতো দেখতে তিমি মাছ থেকে প্রাকৃতিকভাবেই এটি উত্পন্ন হয়। স্পার্ম হোয়েলরা সাধারণত প্রচুর পরিমাণে স্কুইড বা ক্যাটলফিশের মতো ‘সেফালোপড’ প্রজাতির প্রাণী ভক্ষণ করে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চোখের মতো শিকারের অপাচ্য অংশ তাদের হজমের আগেই বমি হয়ে যায়। বমির সঙ্গে তিমির অন্ত্র থেকে একটি কঠিন মোমযুক্ত পদার্থ বের হয়। এটিই হল অ্যাম্বারগ্রিস। সুগন্ধির পাশাপাশি, অতীতে ওষুধ তৈরির উপাদান এবং মশলা হিসেবেও অ্যাম্বারগ্রিস ব্যবহার করা হত।

Next Article