তিরুবন্তপুরম: মাটির তলা থেকে আসছে রহস্যময় জোরালো শব্দ। এতটাই জোরে যে, আশপাশের মানুষকে কিছুক্ষণের জন্য তা প্রায় বধির করে দিচ্ছে। শুক্রবার (২ জুন) ভোরে এই শব্দ শোনা গিয়েছে দুই বার। আর তারপরই বড় মাপের বিপর্যয়ের আশঙ্কায়, আতঙ্ক ছড়িয়েছে কেরলের কোট্টায়াম জেলার ছোট্ট গ্রাম, চেনাপ্পাড়িতে। এই শব্দ ভূমিকম্পের মতো কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ইঙ্গিতবাহী বলে উদ্বিগ্ন তারা। সব থেকে বড় কথা এই শব্দটা এই প্রথম হল না। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই চেনাপ্পাড়ি গ্রাম ও আশপাশের এলাকায় মাটির নীচ থেকে একই রকম জোরালো শব্দ শোনা গিয়েছিল। মাটির নীচে বড় কিছু ঘটে চলেছে বলে মনে করছেন এলাকার বাসিন্দারা। তবে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, আশপাশের পরিবেশে এখনও কোনও দৃশ্যমান পরিবর্তন ধরা পড়েনি। শুধু মাঝে মাঝে ওই রহস্যময় শব্দ শোনা যাচ্ছে। ভূগর্ভ থেকে কী কারণে ওই শব্দ আসছে, তা নির্ধারণে বৈজ্ঞানিক গবেষণা চাইছেন তাঁরা।
এই পরিস্থিতিতে ওই শব্দ রহস্যের সমাধান করতে উদ্যোগী হয়েছে কেরলের ‘খনি ও ভূতত্ত্ব’ বিভাগ। বিভাগের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, শিগগিরই ওই এলাকায় একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানো হবে। তাঁরা ওই এলাকা পরিদর্শন করে রিপোর্ট জমা দেবেন। তবে, সপ্তাহের শুরুতেই যখন ওই এলাকা থেকে রহস্যময় শব্দের খবর এসেছিল, তখনই ওই দল একবার এলাকা পরিদর্শন করেছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে তাঁরা ওই শব্দ রহস্যের কোনও কুলকিনারা করতে পারেননি। কেন্দ্রের ‘সেন্টার ফর আর্থ সায়েন্সেস’ বিভাগই এই শব্দের উৎস খুঁজে বের করতে পরে বলে জানিয়েছে বিভাগের এক সূত্র। ওই সূত্রের দাবি, ‘সেন্টার ফর আর্থ সায়েন্সেস’ এই বিষয়ে বিশদ বৈজ্ঞানিক গবেষণা করলেই এই শব্দের প্রকৃত কারণ জানা যেতে পারে। কারণ, এই ধরনের ঘটনা বিশ্লেষণ করার ক্ষেত্রে রাজ্যের ‘খনি ও ভূতত্ত্ব’ বিভাগের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই এলাকায় বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা ও গবেষণার জন্য ‘সেন্টার ফর আর্থ সায়েন্সেস’-এর কাছে অনুরোধ জানিয়েছে রাজ্য।
এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মহারাষ্ট্রের লাতুর শহরের বাসিন্দারাও শহরের পূর্ব প্রান্তে মাটির নীচ থেকে রহস্যময় শব্দ পাওয়ার অভিযোগ করেছিলেন। শহরের বিবেকানন্দ চক এলাকায় সকাল সাড়ে দশটা নাগদ ওই শব্দ শোনা গিয়েছিল। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, হয়ত ওই এলাকায় কোনও ভূমিকম্প হয়েছে। কিন্তু, লাতুরের ভূমিকম্প কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছিল, ওই দিন ওই এলাকায় কোনও ভূমিকম্প হয়নি। ওই মাসের শুরুতেই লাতুর জেলার নিতুর-দাঙ্গেওয়ারি এলাকাতেও একইরকম শব্দ শোনা গিয়েছিল। তার আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরেও লাতুর জেলরই হাসোরি, কিল্লারি এবং আশপাশের এলাকায় মাটির নীচ থেকে শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। ১৯৯৩ সালে এই কিল্লারি গ্রামেই ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল। মৃত্যু হয়েছিল ১০,০০০ মানুষের।