তিরুবনন্তপুরম: প্রায় তিন মাস ধরে ভাসিয়ে অবশেষে বিদায় নিতে চলেছে বর্ষা (Monsoon)। আর বর্ষার বিদায়ের আগেই চিন্তার খবর শোনাল মৌসম ভবন(IMD)। যে কেরলের পথ ধরে দেশে প্রবেশ করে বর্ষা, সেখানেই বিগত ১০০ বছরে সবথেকে কম বৃষ্টি হল। মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, এবার বর্ষার প্রবেশ যেমন ৮ দিন পর হয়েছে, তেমনই বর্ষার বিদায়ও পিছিয়ে গিয়েছে। এই নিয়ে এটা ১৩তম বছর, যখন বর্ষা দেরিতে বিদায় নিল।
সাধারণত ১ জুন কেরলে প্রবেশ করে বর্ষা। এরপরে তা সারা দেশে একে একে পৌঁছয়। রাজস্থানে বর্ষা পৌঁছয় ১৭ সেপ্টেম্বর। তবে মৌসম ভবনের তথ্য অনুযায়ী, এবার বর্ষা আটদিন পরে কেরলে প্রবেশ করেছে। বর্ষার বিদায়ও শুরু হয়েছে আটদিন পর, ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে। তবে ঘূর্ণাবর্তের কারণে বর্তমানে ভারী বৃষ্টিতে ভাসছে কেরল। আগামী দুই-তিন এই ভারী বৃষ্টিপাত জারি থাকবে।
বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব উত্তর প্রদেশ, ছত্তীসগঢ়ের দক্ষিণ থেকে তামিলনাড়ুর উপকূল ও ওড়িশার পূর্ব অবধি একটি ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে। বঙ্গোপসাগরেও তৈরি হতে পারে নিম্নচাপ। এরফলে দিন কয়েকের মধ্যেই ঝড়বৃষ্টি শুরু হতে পারে। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর উত্তর আন্দামান সাগরের উপরে এই ঘূর্ণাবর্ত এসে পৌছবে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণাবর্তটি বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের রূপ নেবে।
মৌসম ভবনের তথ্য অনুযায়ী, বর্ষাকালে যে স্বাভাবিক পরিমাণ বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা, তার ৮০ শতাংশ বৃষ্টি হয়েছে চলতি বছরে। বাকি বৃষ্টিপাত হয়েছে নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে। তবে এরমধ্যে সবথেকে কম বৃষ্টি হয়েছে কেরলে। বিগত ১০০ বছরের মধ্যে চলতি বছরেই রেকর্ড পরিমাণ কম বৃষ্টি হয়েছে। গত মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর অবধি যেখানে কেরলে ১৯৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল, সেখানেই এবার বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ১২৩১ মিলিমিটার। অর্থাৎ চলতি বছরে কেরলে ৩৮ শতাংশ ঘাটতি হয়েছে বৃষ্টির পরিমাণে। বর্ষা পুরোপুরি বিদায় নিতে আর মাত্র ২ দিন বাকি। এই ২ দিনে এত পরিমাণ ঘাটতি পূরণ অসম্ভব।
মৌসম ভবনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৬ সালে শেষবার কেরলে এমন ভয়ঙ্কর ঘাটতি হয়েছিল বর্ষার। সেই সময়ও ১২৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। ১৯৭৬ সালের ঘাটতির রেকর্ড যদি অটুট রাখতে হয়, তবে আগামী ৪ দিনের মধ্যে কমপক্ষে ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত প্রয়োজন কেরলে। এর আগে ২০১৬ সালে ১৩৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল কেরলে। সেই বছরে কেরলে খরা ঘোষণা করা হয়েছিল। আর কেরলে খরার প্রভাব গোটা দেশেই পড়েছিল। চলতি বছরে যেহেতু আরও কম বৃষ্টি হয়েছে, তাই এবারের প্রভাব আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।