কোচি: পশুদের ওপর হিংসার এক ভয়াবহ চিত্রের সাক্ষী রইল কেরল। কুকুর ও তার ৭ টি ছানার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠল এক মহিলার বিরুদ্ধে। এই নিয়ে এক মাসে এরনাকুলাম জেলায় অবলা জীবদের ওপর নির্যাতনের দ্বিতীয় ঘটনা সামনে এসেছে। কোচির মঞ্জলিতে অলঙ্গাদ থানা এলাকায় ঘটেছে ঘটনাটি।
এরনাকুলাম জেলার করুমাল্লুর পঞ্চায়েত এলাকায় থাকেন মেরি নামের অভিযুক্ত মহিলা। ঘটনার মুহূর্তের ভিডিয়ো নিমেষে সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে নিজের বাড়িতে সেই অভিযুক্ত মহিলা মশাল দিয়ে কুকুর ছানা গুলির গায়ে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন। এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠেছেন অনেকে। ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
কুকুরছানা গুলির মা-কে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন পশুপ্রেমীরা। অভিযুক্ত মহিলা তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। নিজের বয়ানে পুলিশকে জানিয়েছেন যে, তিনি শুধুমাত্র মৃত কুকুরছানাগুলিকে কবর দিয়েছেন।
অলঙ্গাদ থানায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। পশুপ্রেমী সংগঠনের এক সদস্য অভিযোগটি দায়ের করেছেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২৯ ও ১১(১) ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ৪২৯ ধারায় নূন্যতম ৫ বছরের জেল ও জরিমানা হওয়ার কথা। যদিও এটি একটি জামিনযোগ্য ধারা। তাই দোষীর আদৌ শাস্তি হবে কিনা তাই নিয়ে ধন্দে রয়েছেন পশুপ্রেমীরা।
অভিযোগকারী ব্যক্তির বয়ান থেকে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে উঠে এসেছে। এই মহিলা আগেও এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি। দয়া নামক অভিযোগকারী সংগঠনের ওই ব্যক্তির বক্তব্য, “পশু চিকিৎসক আহত কুকুরটিকে ১০ দিন ধরে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। অভিযুক্ত মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন শনিবার কুকুরছানা গুলির জ্বলন্ত অবস্থায় মৃত্যু হয়।”
করুমাল্লুর পঞ্চায়েতের এক সদস্যের থেকে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি সামনে আসার পর ওই মহিলা তাঁদের জানিয়েছেন কুকুরগুলির কারণে তাঁকে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছিল। পঞ্চায়েত সদস্যের কথায়, “তাঁর সমস্যার কথা তিনি আমাদের জানাতে পারতেন। তাহলে আমরা কুকুরগুলিকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারতাম।”
বারবার পশুদের ওপর এই জঘন্য অত্যাচারের ঘটনা সামনে আসায় চিন্তিত পশুপ্রেমীরা। তাঁদের মতে, সতর্কতামূলক প্রচার সত্ত্বেও এই ধরনের ঘটনা থেকে অব্যাহতি মিলছে না। বরং দিনের পর দিন পশুদের ওপর নির্যাতনের নৃশংস ঘটনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
এর আগে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজে নৃশংসভাবে কুকুর নিধনের অভিযোগ ওঠে নার্সিংয়ের দুই পড়ুয়ার বিরুদ্ধে। সেখানে কুকুরছানাগুলিকে পিটিয়ে মারার ভিডিয়ো সামনে এসেছিল। শেষমেষ ওই দুই পড়ুয়াকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ।
আরও পড়ুন আততায়ী এক নয় অনেক! বেহালা খুনে ফুটপ্রিন্ট থেকে সামনে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য