লুধিয়ানা : লুধিয়ানার জেলা আদালতে বিস্ফোরণ (Ludhiana Court Complex blast) কাণ্ডের পরতে পরতে নতুন রহস্য। তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই নতুন জট খুলছেন পঞ্জাব পুলিশের (Punjab Police) আধিকারিকরা। লুধিয়ানার বিস্ফোরণের পিছনে খলিস্তানিপন্থীদের (Khalistani Elements) মদত থাকতে পারে বলে নতুন তত্ত্ব উঠে আসছে। পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের (ISI) যোগের সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
পঞ্জাব পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার লুধিয়ানা কোর্ট কমপ্লেক্সে বিস্ফোরণের তদন্তের সময় খলিস্তানি, গ্যাংস্টার এবং মাদক চোরাচালানকারীদের সঙ্গে যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, এই মামলায় পাকিস্তানের আইএসআই-এর ভূমিকাও সন্দেহের তালিকা থেকে বাইরে রাখা হচ্ছে না।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে পঞ্জাব পুলিশের ডিজি জানিয়েছেন, “আমরা তদন্তে নেমে দেখেছি খলিস্তানি, গুন্ডা এবং মাদক চোরাচালানকারীদের সঙ্গে ঘটনাটির একটি যোগ রয়েছে। আমরা সন্ত্রাসবাদ এবং মাদক দমনে এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি। মাদক সংক্রান্ত অপরাধ এবং সন্ত্রাসবাদ – এই দুটি মিশে গেলে তা খুবই বিপজ্জনক। লুধিয়ানার ঘটনাটিও এমনই একটি মামলা বলে মনে করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “এটি একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্র। অভিযুক্ত পঞ্জাব পুলিশের এক কর্মচারী ছিল। সে জানত কীভাবে চেক পয়েন্ট এবং পুলিশ চেকিং এড়িয়ে যেতে হয়। বোমাটি তার পেটে বেঁধে রাখা হয়েছিল। অভিযুক্ত গগনদীপ ইলেকট্রনিক ডিভাইসে যথেষ্ট দক্ষ ছিল। আইনি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ থেকেই এমন নাশকতা বলে অনুমান করা হচ্ছে।” তাঁর মতে, “এর পিছনে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের হাত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। একইসঙ্গে অন্যান্য দিকগুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
প্রাথমিক তদন্তের পর জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর (National Security Guard) তরফে জানানো হয়, বিস্ফোরণস্থল থেকে যে ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তিনিই বিস্ফোরণটি ঘটিয়েছিলেন। মৃত ওই ব্যক্তির নাম গগনদীপ সিং। তিনি প্রাক্তন পুলিশকর্মী। তিনি হেড কন্সটেবল ছিলেন, কিন্তু ২০১৯ সালে তাঁকে চাকরি থেকে বের করে দেওয়া হয়। মাদক পাচার কাণ্ডে তাঁর মদত প্রমাণিত হওয়ায়, দুই বছরের জন্য জেলেও পাঠানো হয় তাঁকে। চলতি বঠরের সেপ্টেম্বর মাসেই তিনি জেল থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। গত ২৩ তারিখ লুধিয়ানার রেকর্ডরুমের পাশে শৌচালয়ে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল ওই মামলার যাবতায় প্রমাণ লোপাট করতেই।
সূত্রের দাবি, যে সময়ে আদালতের ভিতরে বিস্ফোরণ হয়েছিল, ঠিক সেই সময়েই গগনদীপের ফোনেও বিস্ফোরণ হয়। কিন্তু তাঁর কাছে একটি ইন্টারনেট ডঙ্গল ছিল, সেটি দিয়েই অনলাইনে কারোর কাছ থেকে বিস্ফোরণটি কীভাবে ঘটাতে হবে, সেই সম্পর্কে গগনদীপকে যাবতীয় তথ্য দিচ্ছিল অন্য কেউ। তবে অভিজ্ঞতা না থাকায়, সঠিকভাবে বোমাটি তৈরির আগেই তা ফেটে যায়।