কুম্ভমেলায় ভুয়ো করোনা রিপোর্ট নিয়ে তোলপাড়, তদন্তের নির্দেশ মেলা পরিচালন কর্তৃপক্ষেরও

ঈপ্সা চ্যাটার্জী |

Jun 17, 2021 | 2:18 PM

জেলা স্বাস্থ্যবিভাগের তরফে যে ২২টি ল্যাবরেটরিগুলিকে পুণ্যার্থীদের করোনা পরীক্ষার দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছিল, তাদের অধিকাংশই ভুয়ো করোনা রিপোর্ট জমা দিয়েছে। একই মোবাইল নম্বরে ৫০ জনের নাম রেজিস্টার করার অভিযোগও উঠেছে ওই ল্যাবরেটরিগুলির বিরুদ্ধে।

কুম্ভমেলায় ভুয়ো করোনা রিপোর্ট নিয়ে তোলপাড়, তদন্তের নির্দেশ মেলা পরিচালন কর্তৃপক্ষেরও
তৃতীয় শাহি স্নানে সাধু-সন্ন্যাসীদের ভিড়। ফাইল ছবি।

Follow Us

হরিদ্বার: কুম্ভমেলা নিয়ে কম বিতর্ক ছিল না, তার উপর ভুয়ো করোনা নেগেটিভ রিপোর্টের বিষয়টি সামনে আসায় ফের আগুনে ঘি পড়ল। সূত্র অনুযায়ী, উত্তরাখণ্ড সরকারের তরফে হরিদ্বার জেলা প্রশাসনকে এই বিষয়ে বেসরকারি ল্যাবরেটরির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে বলা হয়েছে।

করোনা সংক্রমণের মাঝে কুম্ভমেলার আয়োজন করায় গোটা দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল, “সুপার স্প্রেডার”-র তকমা দেওয়া হয়েছিল কুম্ভমেলাকে। তবে রাজ্য সরকার ও কুম্ভমেলা পরিচালন কমিটির তরফে জানানো হয়েছিল, যথাসম্ভব করোনাবিধি মেনেই মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। আগত পুণ্যার্থীদের করোনা পরীক্ষা, মাস্ক পরার মতো বিধিগুলিও পালন করা হয়েছিল। তবে একাধিক সাধু-সন্ত করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরই ফাঁকা হতে থাকে কুম্ভমেলা চত্বর। পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আবেদন তা নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ করে দেওয়া হয়।

ভুয়ো রিপোর্ট ঘিরে বিতর্ক:

সম্প্রতিই জানা যায়, জেলা স্বাস্থ্যবিভাগের তরফে যে ২২টি ল্যাবরেটরিগুলিকে পুণ্যার্থীদের করোনা পরীক্ষার দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছিল, তাদের অধিকাংশই ভুয়ো করোনা রিপোর্ট জমা দিয়েছে। একই মোবাইল নম্বরে ৫০ জনের নাম রেজিস্টার করার অভিযোগ উঠেছে ওই ল্যাবরেটরিগুলির বিরুদ্ধে। সূত্র অনুযায়ী, উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের তরফে দৈনিক ৫০ হাজার করোনা পরীক্ষার যে কোটা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, তা পূরণ করতেই এই ভুয়ো রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছিল ল্যাবগুলির তরফে।

গোটা বিষয়টি সামনে আসতেই হরিদ্বার জেলা প্রশাসনের তরফে ওই ২২টি ল্যাবের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ দিকে, বুধবার কুম্ভ মেলার আয়োজকদের তরফেও ভুয়ো করোনা পরীক্ষা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে কুম্ভ মেলার ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডঃ অর্জুন সিং সেঙ্গারের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।

এই বিষয়ে অর্জুন সিং জানান, ১ এপ্রিল থেকে ৩০ অবধি চলা কুম্ভমেলায় আগত দর্শনার্থীদের জন্য আরটি-পিসিআর ও ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। হরিদ্বার, দেহরাদুন, রুরকি ও হরিয়ানার মোট ১১টি ল্যাবকে এই পরীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। মোট ২ লক্ষ ৫১ হাজার ৪৫৭ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয় মেলা প্রাঙ্গণে। এরমধ্যে ২ লক্ষ ৭ হাজার ১৫৯ জনের অ্যান্টিজেন পরীক্ষা ও ৪৪ হাজার ২৭৮ জনের আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করা হয়েছিল বলেই জানিয়েছিল ল্যাবগুলি। এদের মধ্যে অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় মাত্র ১ হাজার ২৩ জনের এবং আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় ১২৫০ জনের রিপোর্ট পজেটিভ এসেছিল। তবে পরিচয়পত্রে গরমিলের হদিশ মিলতেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ল্যাবগুলির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: বিশ্লেষণ: রক্ষাকবচহীন টুইটার! এ বার কেন্দ্র চাইলেই… 

Next Article