কলকাতা: একদিকে যখন ত্রিপুরায় (Tripura) নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে সবরকমের প্রস্তুতি নিচ্ছে ঘাসফুল শিবির, অন্যদিকে তখন বারবার সংঘাত তৈরি হয়েছে বিপ্লব দেব (Biplab Deb) সরকারের সঙ্গে। গত কয়েক মাসে সেই সংঘাতের অন্য়তম ভূমিকা ছিল ত্রিপুরার খোয়াই (Khowai) থানার। প্রথমে তৃণমূলের (TMC) একাধিক নেতা-নেত্রীকে গ্রেফতার করে রাখা হয়েছিল ওই থানায়। পরে ওই থানা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishke Banerjee), কুণাল ঘোষদের (Kunal Ghosh) সমন পাঠানো হয় ওই থানা থেকে। এবার সেই থানার তদন্তকারী অফিসারকেই আইনি প্যাঁচে ফেলতে চিঠি দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
ত্রিপুরার খোয়াই থানা থেকে যে মামলায় সমন পাঠানো হয়েছিল, সেই মামলার তদন্তকারী অফিসারকে কড়া চিঠি দিলেন কুণাল ঘোষ। তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধেই আদালতে যাওয়ার আইনি প্রক্রিয়া শুরু করে পাল্টা চাপ বাড়ালেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। চিঠিতে তিনি তাঁর পূর্ণাঙ্গ বয়ান লিখেছেন। বুধবার বিকেলে খোয়াই থানায় কুণালের সেই চিঠি পৌঁছে গিয়েছে। সেখানের তৃণমূল নেতার স্পষ্ট দাবি, অভিষেকসহ ছয় নেতার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন।
একই সঙ্গে ঘটনার দিনের একটি সিডি তদন্তকারীকে অফিসারকে দিয়েছেন তিনি। কুণাল তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, আমি আপনার নোটিসে সাড়া দিয়ে দেখা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু আপনি আমার বক্তব্যের একটি লাইনও লিপিবদ্ধ করেননি। সিডিও নিতে চাননি। তাই আমি স্পিড পোস্টে পাঠালাম। আমার বয়ান এবং সিডি কেস রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত করুন এবং এগুলি কোর্টে পেশ করুন। কুণাল প্রশ্ন তুলেছেন কেন তাঁর জেরার ভিডিয়ো রেকর্ডিং হল না?
কুণালের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেন, তদন্তকারী অফিসার যদি এই বয়ান এবং সিডি তদন্তে অন্তর্ভুক্ত না করেন, তাহলে আমরা আদালতে ওই অফিসারের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তদন্তের অভিযোগ আনব। আমরা জানাব নোটিস দিয়ে ডেকেও যথাযথ বয়ান নেওয়া হয়নি। তদন্ত পক্ষপাতদুষ্টভাবে করা হয়েছে। ”
গত মাসে এই মামলায় সমন পাঠিয়েছিল ত্রিপুরা পুলিশ। সেই মতো হাজিরাও দেন কুণাল ঘোষ। জিজ্ঞাসাবাদও চলে বেশ কিছুক্ষণ। কিন্তু থানাতেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি।
গত অগস্ট মাসে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে গিয়ে আক্রান্ত হন সুদীপ রাহা, জয়া দত্ত। দেবাংশু ভট্টাভার্য, সুদীপ ও জয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। খোয়াই থানায় রাখা হয়েছিল তাঁদের। সেই খবর পেয়েই ত্রিপুরায় ছুটে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূলের একাধিক নেতা-নেত্রী। ছিলেন কুণাল ঘোষ, দোলা সেনও। খোয়াই থানায় তাঁদের বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল। ওই ঘটনার জেরে আগেই নোটিস পেয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর সেই একই কারণে সমন পাঠানো হয় কুণাল ঘোষকে। ৪১ এ ধারা অনুযায়ী, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। থানায় বসে পুলিশের কাজে তথা সরকারি বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কুণালের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: Sukanta Majumder: ‘এঁরা থাকতে কাজ করতে পারিনি’ সব্যসাচীর ঘরওয়াপসি-তে মুখ খুললেন সুকান্ত