লখনউ: লখিমপুরে কৃষক মৃত্যু ঘিরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েই চলেছে। একদিকে কংগ্রেস নেতৃত্বের লখিমপুরে (Lakhimpur) যাওয়ার চেষ্টা, অন্যদিকে, সীতাপুরে (Sitapur) কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী(Priyanka Gandhi)-র আটক থাকা- দুই মিলিয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কায় সীতাপুরে ১২ ঘণ্টা ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ (Internet Suspended) রাখার সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন। বুধবারই উত্তর প্রদেশ পুলিশের তরফে এই ঘোষণা করা হয়।
তবে পুলিশের ঘোষণার আগে থেকেই কংগ্রেসের তরফে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। পরে পুলিশ সেই দাবিকেই মান্যতা দিয়ে জানায়, সামাজিক মাধ্যমগুলির সাহায্যে যাতে হিংসা না ছড়ায়, সেই কারণেই আগামী ১২ ঘণ্টা ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, এই সীতাপুরেই আটক রয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী।
ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের তরফে টুইট করে লেখা হয়েছে, “ভীত উত্তর প্রদেশ সরকার সীতাপুরের ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে, যেখানে প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকে বেআইনিভাবে আটক করে রাখা হয়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্যেের স্বৈরাচারী শাসক বিজেপি বিরোধীদের কন্ঠরোধ করতে চাইছে। কিন্তু তারা এই কাজে সফল হবে না, আমরা কিছুতেই পিছু হটব না।”
রাহুল গান্ধীও এ দিন সকালেই সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন যে, দুই মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল ও চরণজিৎ সিং চন্নির সঙ্গে তিনি লখনউ যাচ্ছেন। সেখান থেকে তিনি লখিমপুরে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করবেন। যদিও লখনউয়ের পুলিশ কমিশনার ডিকে ঠাকুর জানিয়েছেন, লখিমপুরে যাওয়ার অনুমতি নেই রাহুল গান্ধীর।
তিনি বলেন, “যদি উনি (রাহুল গান্ধী) লখনউয়ে আসেন, তবে আমরা ওনাকে বিমানবন্দরেই অনুরোধ জানাব যে তিনি যেন লখিমপুর খেরি ও সীতাপুরে না যান। দুটি শহরেরই পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকদেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন কাউকে ওই অঞ্চলে ঢুকতে না দেন। রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
তবে সূত্রের খবর, সমস্ত দিক পর্যালোচনা করে রাহুল গান্ধী সহ কংগ্রেসের তিন প্রিতিনিধি দলকে লখিমপুরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে বৈঠকের পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই লখনউ পৌঁছবেন রাহুল গান্ধী। তারপরই তিনি সড়কপথে লখিমপুরে যাবেন।
এ দিকে, স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কেবল সীতাপুরই নয়, বুধবার সকালে বাহরিচেও কয়েক ঘণ্টার জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল। ওখানেই মৃত কৃষকদের শেষকৃত্য হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেই কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরই ফের ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। লখিমপুর খেরিতেও ৩ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টা থেকে মঙ্গলবার সন্ধে ৬টা অবধি ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ ছিল।
লখিমপুরে সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের আটকাতে ইতিমধ্যেই সীতাপুর-লখিমপুর হাইওয়েতে কড়া পুলিশি পাহারা মোতায়েন করা হয়েছে। তিনকুনিয়া, যেখানে রবিবারের ঘটনাটি ঘটে, সেখানেও বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
মঙ্গলবারই ২৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যাচ্ছে কৃষকদের ধাক্কা ও তার উপর দিয়ে চাপা দিয়ে চলে যাচ্ছে। ওই ভিডিয়োয় একটি এসইউভি গাড়ি দেখা গেলেও সেই ভিডিয়োটি লখিমপুরেরই কিনা, তা এখনও জানা যায়নি।