লখনউ: লখিমপুর খেরির হিংসা (Lakhimpur Violence) ও কৃষক মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিল যোগী সরকার। রবিবারের হিংসার ঘটনা নিয়ে ক্রমাগত চাপ বাড়তে থাকায় এক প্রাক্তন বিচারপতির হাতে গোটা ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিল উত্তর প্রদেশ সরকার (Uttar Pradesh Government)। একইসঙ্গে মৃতদের পরিবার পিছু ৪৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণ (Compensation) ও একজন সদস্যকে সরকারি চাকরি (Government Job) দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিল যোগী সরকার।
রবিবার কৃষক মৃত্যুর ঘটনার পরই উত্তপ্ত জাতীয় রাজনীতি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ১৪৪ ধারায় জারি করা হয়েছে লখিমপুর খেরি এলাকায়, বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও। উত্তর প্রদেশ সরকারের আবেদনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফেও দুই কম্পানি প্যারামিলিটারি বাহিনী (Paramilitary Force) ও দুই কম্পানি এসএসবি (SSB) জওয়ানদেরও পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৬ অক্টোবর অবধি সেনা মোতায়েন থাকবে ওই এলাকায়।
এ দিকে, একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতারাও লখিমপুর খেরিতে ঢোকার চেষ্টা কররেন, কিন্তু কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আটক করা হয়েছে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী (Priyanka Gandhi) ও সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব(Akhilesh Yadav)-কে। তবে কৃষকদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হবে না বলে আগেই জানানো হয়েছিল। এ দিন সকালেই সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেন ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের নেতা রাকেশ তিকাইত (Rakesh Tikait)। দুই পক্ষের মধ্য়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনার পরই আর্থিক সহায়তা ও সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিতে রাজি হয়েছে উত্তর প্রদেশ সরকার, এমনটাই জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, রাকেশ তিকাইতের নেতৃত্বে আন্দোলনকারী কৃষকরা প্রথমে সরকার পক্ষের কাছে পরিবার পিছু ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি করলেও পরে সরকার জানায়, গতকালের সংঘর্ষে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৪৫ ল৭ টাকা ও সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। যারা আহত হয়েছেন, তাদেরও ১০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে, পরিবারের যে সদস্য চাকরি নিতে চায়, তার শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই করে সেই অনুযায়ী পদ দেওয়া হবে। কৃষকরাও এই শর্তে রাজি হয়েছে এবং মৃত ওই ৪ কৃষকের দেহ সৎকারের অনুমতি দিয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
এ দিন সকাল থেকে পাঁচ দফায় আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কৃষি বিভাগের অতিরিক্ত মুখ্য়সচিব দেবেশ চতুর্বলেদী, লখনউয়ের ইন্সপেক্টর জেনারেল লক্ষ্মী সিং ও লখনউয়ের এডিজি এসএন সাবাত। পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি প্রশান্ত কুমার জানান, কৃষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে মন্ত্রী পুত্রের বিরুদ্ধে। গোটা ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত করা হবে। হাইকোর্টের কোনও প্রাক্তন বিচারপতিকে এই তদন্তের দায়িত্বভার দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।