নয়া দিল্লি: গত জানুয়ারি মাসে নজিরবিহীন দৃশ্য দেখা গিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন আইনজীবীদের একাংশ। এমনকি, বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কটেরও ডাক দিয়েছিলেন তাঁরা। এই ধরনের ঘটনা বন্ধ করতে সক্রিয় সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, আইনজীবীরা ধর্মঘট করতে পারবেন না। তাঁদের কাজ থামালে চলবে না। আইনজীবীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য, দেশের সমস্ত হাইকোর্টকে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে রাজ্য স্তরে একটি করে অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই কমিটির কাছেই তাদের সমস্যাগুলি তুলে ধরতে পারবেন আইনজীবীরা।
পাশাপাশি, জেলা আদালত পর্যায়ে পৃথক অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি এমআর শাহ এবং বিচারপতি আহসানউদ্দিন আমানুল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। বেঞ্চ জানিয়েছে, এই ফোরামে নিম্ন আদালতের আইনজীবীরা মামলা দায়ের বা মামলা তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়াগত পরিবর্তন বা অসদাচরণ সম্পর্কে তাঁদের অভিযোগের প্রতিকার চাইতে পারবেন। বিচারপতি এমআর শাহ বলেন, “আমরা আবার বলছি যে, বারের কোনও সদস্য ধর্মঘট করতে পারবেন না। বারংবার এই আদালত বলেছে, আইনজীবীরা ধর্মঘট করলে বা তারা কাজ বন্ধ রাখলে থেকে বিচারের কাজ ব্যাহত হয়।”
দেরাদুনের জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন শীর্ষ আদালতে তাদের অভিযোগগুলির প্রতিকারের জন্য একটি উপযুক্ত ফোরাম চেয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন করেছিল। সেই আবেদনের ভিত্তিতে হওয়া মামলার রায় ঘোষণার সময়ই আদালত এই দুটি ফোরাম গঠনের নির্দেশ দেয়। শুধু তাই নয়, আদালতের আদেশের অনুলিপি দেশের সমস্ত হাইকোর্টের আদালতের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে পাঠিয়ে, আদালত তাদের আদেশ অনুসারে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। বিচারপতি এমআর শাহ বলেন, “বার সদস্যদের যদি মামলা দায়ের এবং তালিকাভুক্তির পদ্ধতিগত পরিবর্তনের কারণে বা নিম্ন বিচার বিভাগের সদস্যদের অসদাচরণ সম্পর্কিত কোনও সত্যিকারের অভিযোগ থাকে, তাহলে তাঁরা এই ফোরামের মাধ্যমে তার সমাধান করতে পারবেন। এর ফলে ধর্মঘট এড়ানো যাবে।”
বিচারপতি এমআর শাহ জানিয়েছেন, দেশের প্রত্যেকটি হাইকোর্টে এই ধরনের অভিযোগের নিষ্পত্তির জন্য অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটি গঠন করার অনুরোধ করা হয়েছে। এই কমিটির নেতৃত্বে থাকতে পারেন সংশ্লিষ্ট হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। কমিটিতে আরও দুই জন সিনিয়র বিচারপতি থাকবেন। বিচার বিভাগ এবং বার থেকে একজন করে প্রতিনিধি মনোনীত করবেন প্রধান বিচারপতি। পাশাপাশি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল, রাজ্যের বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এবং হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এই কমিটিতে থাকবেন। জেলাস্তরেও এই ধরনের অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটি তৈরি করতে পারবে হাইকোর্ট।