Lion Relocation: গিরে গিজগিজ করছে সিংহ, ভয় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ারও! পশুরাজদের নতুন ঠিকানা হতে চলছে এই জায়গা
Gir National Park: গুজরাটে সিংহদের অস্তিত্ব বিপন্ন, এই অভিযোগে এক জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। অভিযোগ করা হয়, গির অরণ্যে সিংহদের থাকার মতো উপযুক্ত পরিবেশ আর নেই। সিংহের সংখ্যা এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে, সেই অনুপাতে থাকার জায়গা নেই।
আহমেদাবাদ: জঙ্গলই তাদের ঠিকানা হলেও, কখনও দেখা যাচ্ছে তারা রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন, কখনও আবার গ্রামের আনাচ-কানাচে। গিরের জঙ্গলে আর ঠাঁই হচ্ছে না সিংহদের। জঙ্গলের রাজাদের এবার ভাগ্য খুলছে। শীঘ্রই নতুন ঘর পেতে চলেছে পশুরাজরা। ২০২৫ -সালের শেষেই খুলে যাচ্ছে তাদের দ্বিতীয় ঘর। গুজরাটের গির থেকে কিছুটা দূরে গড়ে উঠছে সিংহদের আস্তানা। অনুমোদন দিয়েছে মোদী সরকার। প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্ব পেয়েছে লায়ন কনজারভেশন সোসাইটি ও গুজরাট বন দফতরের উপর।
প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, গিরের পর বরদায় তৈরি করা হবে সিংহদের অভয়ারণ্য। গির থেকে কমবেশি ২৫০ সিংহ বরদায় পাঠানো হবে। ভারতের একমাত্র এশিয়াটিক সিংহের আবাস হিসাবেই বিশ্বজুড়ে গিরের পরিচিতি। তবে গিরের সিংহদের একাংশকে পার্শ্ববর্তী কোনও এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এই ভাবনা নতুন নয়। বহুদিন ধরেই কথা, ফাইল চালাচালি চলছে।
জানা গিয়েছে, গুজরাটের গির অভয়ারণ্যে প্রায় ৩০০টি সিংহ থাকতে পারে। কিন্তু সেখানে বর্তমান সিংহের সংখ্যা দ্বিগুণেরও অনেক বেশি। সংখ্যা বাড়ায় করিডর দিয়ে নতুন এলাকায় চলে যাচ্ছে সিংহরা। আর সেই সময়ই সিংহের মৃত্যু ঘটছে।
গুজরাটে সিংহদের অস্তিত্ব বিপন্ন, এই অভিযোগে এক জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। অভিযোগ করা হয়, গির অরণ্যে সিংহদের থাকার মতো উপযুক্ত পরিবেশ আর নেই। সিংহের সংখ্যা এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে, সেই অনুপাতে থাকার জায়গা নেই। এমনকী, কোনও বড় ধরনের মড়ক হলে পুরো প্রজাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার ভয়ও রয়েছে।
শুনানির সময়ে গির অভয়ারণ্যের বিকল্প হিসেবে উঠে আসে মধ্য প্রদেশের কুনো পালপুর অভয়ারণ্যের নাম। ২০২১ সালে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিয় কোর্ট। কিন্তু সেই কমিটি জানায়, কুনো নয়, বরদাই সিংহদের দ্বিতীয় বাসস্থান হিসাবে উপযুক্ত স্থান।
এই সুপারিশ দেওয়ার পর গত দেড় -দু’বছর ধরে বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টের উপরে ধুলো জমছিল। অবশেষে সিংহদের দ্বিতীয় ঘর হিসাবে বরদা অভয়ারণ্যকেই চূড়ান্ত করা হল। এর পিছনে মূল যে কারণগুলি রয়েছে, সেগুলি হল-
১. গিরের সঙ্গে বরদার জলবায়ুগত মিল
২. বরদা সংরক্ষিত অভয়ারণ্য এলাকা
৩.গিরের ভিতর দিয়েই সিংহদের বরদায় আনা যাবে।
কয়েক মাস আগে গির থেকে প্রায় ৯৫ কিলোমিটার দূরে বারদায় একটি পুরুষ এশিয়াটিক সিংহের দেখা মিলেছিল। প্রশাসন খোঁজখবর নেওয়া শুরু করতেই জানা যায় যে ৭ মাস ধরে বরদায় ঘাঁটি গেড়ে ছিল পশুরাজ। বরদার মূল জঙ্গলের ভিতরেই ঠাঁই নিয়েছিল ওই সিংহ। এরপর থেকে বরদায় চলে যাওয়া পুরুষ সিংহকে কড়া নজরে রাখা হয়েছিল। ক্রমে স্পষ্ট হয় যে গির থেকে বরদার অভয়ারণ্যে এলেও সিংহটির আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে খুব একটা অসুবিধা হয়নি। তারপরই বরদায় সিংহদের নতুন ঘর তৈরির প্রস্তাব নিয়ে ফের চিন্তাভাবনা শুরু হয়।
ভারতে বাঘেদের মতই পশুরাজও নানান সমস্যায় জর্জরিত। খাবারের সমস্যা, জঙ্গল কমে আসা – এসব তো রয়েইছে। গত দুই দশক ধরে গিরের সিংহের মধ্যে আচরণগত পরিবর্তনও স্পষ্ট হয়েছে। জানা গিয়েছে, সিংহরা দলে দলে পশ্চিমে সমুদ্রের দিকে সরে আসছে। গিরের মূল এলাকা থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরেও সিংহদের দেখা মিলছে। সমুদ্র উপকূলের ধারে ঘাঁটি গেড়েছে সিংহের কয়েকটি দল। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ডের ভারতীয় প্রতিনিধি সাবিত্রী মানবা বিষয়টি প্রথম করেছিলেন।