গান্ধীনগর: গুজরাটের মোরবিতে মাচ্ছু নদীর উপর সেতু বিপর্যয়ে মৃতের সংখ্যা প্রায় ১৪১। এখনও অনেকে জলের নীচে কাদায় অন্তত ১০০ জনের দেহ আটকে রয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। রবিবার সন্ধেবেলা প্রায় ৫০০ জন সাধারণ মানুষ নিয়ে নদীতে ছিঁড়ে কেবল সেতু। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকাজে দমকল বাহিনী, রাজ্য় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী তৎপর হলেও ছট পুজোর কারণে সেই সেতু পর্যন্ত সরু রাস্তা দিয়ে যেতে সময় লেগে যায়। সেই সময় উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারাই।
হঠাৎই কেবল ছিঁড়ে হুড়মুড়িয়ে নদীতে ছিঁড়ে পড়ে সেতুটি। সেতুর কোনও অংশ, পাটাতন, কেবল ধরে প্রাণে বাঁচার চেষ্টা করছেন একাধিক জন। সেই সময় নিজেদের প্রাণের তোয়াক্কা না করে এগিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই সময় জিগনেশ লালজিভাই ও তাঁর গ্রুপের সেই জায়গা দিয়ে যাচ্ছিলেন। আর্তনাদ, চিৎকার শুনতে পেরে দু’বার না ভেবে তাঁরা নদীতে ঝাঁপ দেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি আমার ছেলেদের সেতুর দিকে যেতে বলি। যাঁরা সাঁতার কাটতে পারতেন তাঁরা নদীতে ঝাঁপ দেন। যাঁরা পারতেন না তাঁরা নদীতে দড়ি ছুড়ে দেন।’ তাঁদের সাহায্যে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ জন প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিল শিশুও। এছাড়াও আশেপাশের আরও অনেক স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধারকাজে এগিয়ে আসেন।
দুর্ঘটনার মুহূর্তে প্রায় ৫০০ জন সেতুর উপর উপস্থিত ছিলেন। দুর্ঘটনার মুহূর্তের একটি ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েকজন যুবক সেই সেতুর কেবল ধরে ঝাঁকুনি দিচ্ছেন। তার পরই মুহূর্তের মধ্যে ছিঁড়ে পড়ে যায় সেই সেতু। আর চোখের নিমেষে ৫০০ জন জলে পড়ে যায়। গত এক দশকে এত বড় বিপর্যয় দেশবাসী দেখেনি। এদিকে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের তরফে নিহতদের পরিবার ও আহতদের আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তের জন্য ৫ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটিও গঠন করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। এদিন তাঁর মোরবিতে যাওয়ার কথা। তিনি নিজে গতকাল উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে। আর এই ঘটনায় আগামী ২ নভেম্বর রাজ্যব্যাপী শোক পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে গুজরাট সরকার।