চেন্নাই: একজন পুরুষ ও স্ত্রী দীর্ঘদিন সহবাস করলেই বা এক ছাদের তলায় থাকলেই তাঁরা বৈবাহিক আইনি অধিকার পাবেন না। এর জন্য আইন স্বীকৃত কোনও উপায়ে তাঁদের বিবাহ সম্পন্ন হতে হবে। আজ এমনটাই জানিয়েছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। কোয়েম্বাটোরের আর কালাইসেলভির এক আবেদন খারিজ করার সময় আজ এমনটাই জানিয়েছেন বিচারপতি এস বৈদ্যনাথন এ বিচারপতি আর বিজয়কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ।
উল্লেখ্য, কালাইসেলভি বিবাহ বিচ্ছেদ আইন, ১৮৬৯ এর ৩২ ধারা অনুযায়ী দাম্পত্য অধিকার দাবিতে কোয়েম্বাটোরের একটি ফ্যামিলি কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। ফ্যামিলি কোর্টে ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আবেদনটি খারিজ হয়ে যায়। তারপরে, সেই আবেদন যায় মাদ্রাজ হাইকোর্টে। আর কালাইসেলভি নামের ওই মহিলা হাইকোর্টে দাবি করেন যে তিনি ২০১৩ সাল থেকে জোসেফ বেবি নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে সহবাস করছিলেন। কিন্তু, পরে ওই ব্যক্তি তাঁকে ছেড়ে চলে যান।
কিন্তু ওই মহিলার আবেদন খারিজ করে দেন বিচারপতিরা। বিচারপতিদের বক্তব্য, ফ্যামিলি কোর্টের বিচারক যে সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন, তার সঙ্গে একমত হতে তাঁদের কোনও দ্বিধা নেই।
বিচারপতিরা জানিয়েছেন, “যখন কোনও একটি আইনের আওতায় বিয়েটিই আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন হয়নি, তখন যদি এটা ধরেও নেওয়া হয় যে তাঁরা দীর্ঘদিন টানা সহবাস করেছেন, একসঙ্গে থেকেছেন… তাতেও দাম্পত্য অধিকার পাওয়ার জন্য এই আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না।”
নিম্ন আদালতের নির্দেশ বহাল রেখে মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি এস বৈদ্যনাথন এ বিচারপতি আর বিজয়কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, “দীর্ঘদিন ধরে সহবাস বা এক ছাদের তলায় থাকা যুগলরা ফ্যামিলি কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে কোনও বৈবাহিক বিরোধ উত্থাপন করার কোনও আইনি অধিকার পাবেন না। এর জন্য তাঁদের বিবাহ আইন সম্মত পদ্ধতিতে সম্পন্ন হওয়া দরকার।”
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই এক পর্যবেক্ষণে দিল্লির নিম্ন আদালত জানিয়েছিল, যৌনতায় সম্মতি মানে নারীকে অন্তঃসত্ত্বা করার অধিকার নয়। কোনও মহিলার সঙ্গে সম্মতিতে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হলেই কি যা খুশি তাই করা যায়? শুধুমাত্র যৌন সম্পর্ক স্থাপনের অনুমতি বা সম্মতি পাওয়া মানে এটা নয় যে পুরুষসঙ্গী ওই মহিলার প্রজননগত অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন। বা ওই মহিলাকে শারীরিকভাবে অত্যাচার করা যাবে। সম্প্রতি এক ধর্ষণের অভিযোগের বিরুদ্ধে জামিনের আবেদন জানানো এক ব্যক্তির আর্জি খারিজ করে পর্যবেক্ষণে এমনটাই জানিয়েছিল দিল্লির এক নিম্ন আদালত। পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল, একজন মহিলা তাঁর যৌনতার স্বাধীনতা ব্যবহার করে নিজের যৌনসঙ্গীর সঙ্গে লিপ্ত হতে পারে। কিন্তু সেই পুরুষসঙ্গী এটা ধরে নিতে পারেন না যে মহিলার প্রজননের অধিকার বা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অধিকারের ক্ষেত্রেও তাঁকে সম্মতি দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন : Consent for Sex: যৌনতায় সম্মতি মানেই নারীর প্রজননের অধিকারে হস্তক্ষেপ নয়, পর্যবেক্ষণ আদালতের