নয়া দিল্লি: চিনের গন্ডি পেরিয়ে কি এবার ভারতেও ঢুকে পড়ল রহস্যময় নিউমোনিয়া? ইতিমধ্যে ৭ শিশু ‘মাইকোপ্লাজমা (M) নিউমোনিয়া’য় আক্রান্ত হয়েছে বলে দিল্লি এইমসের রিপোর্টে উঠে এসেছে। তবে এইমসের চিকিৎসকেরা এটিকে ‘M নিউমোনিয়া’ বলে উল্লেখ করলেও ৭ শিশুর দেহে যে ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গিয়েছে, সেটির সঙ্গে চিনা নিউমোনিয়ার (China Pneumonia) ব্যাকটেরিয়ার যোগ থাকতে পারে বলে মনে করছে AIIMS।
এইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৭ শিশুর দেহে M-নিউমোনিয়ার ব্যাকটেরিয়ার পাওয়া গিয়েছে। PCR টেস্টে প্রথমে এক শিশুর দেহে M-নিউমোনিয়ার ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গিয়েছে। পরে IgM Elisa টেস্টে আরও ৬ শিশুর দেহে একই ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। PCR টেস্টে ৩ শতাংশ ব্যাকটেরিয়া ধরা পড়লেও IgM Elisa টেস্টে ১৬ শতাংশ ধরা পড়ে। তাই IgM Elisa টেস্টের উপরই জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
বিশ্বজুড়ে মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়া সংক্রমণের যে প্রকোপ শুরু হয়েছে, তার উপর বিশেষ নজর রাখছে দিল্লি এইমস। দিল্লি এইমসের মাইক্রোবায়োলজির প্রাক্তন প্রধান তথা NIMS-এর ডিন ডা. রমা চৌধুরী জানাচ্ছেন, এম (মাইকোপ্লাজমা) ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ। এটি শরীরে সাধারণত মৃদু প্রভাব ফেলে। এটিকে ‘ওয়াকিং নিউমোনিয়া’ বলা হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতি গুরুতর হতে পারে। এই নিমোনিয়ার ব্যাকটেরিয়া দ্রুত শনাক্ত করতে নজরদারি বাড়ানো জরুরি বলেও জানান তিনি।
চিকিৎসকদের মতে, চিনে যে নিউমোনিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে, সেটির কারণ বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার একসঙ্গে সংক্রমণ, যার মধ্যে H9N2 রয়েছে। এর থেকে বাঁচতে মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন BLK-Max সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সন্দীপ নায়ার। চিনে নিউমোনিয়ার যে প্রকোপ দেখা দিয়েছে সেটা ভারতের জন্য কেবল সতর্কবার্তা নয়, আগাম সাবধানতা অবলম্বনও জরুরি। এই সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে এবং সেটা অব্যাহত রাখা জরুরি বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস ধরে চিনে রহস্যময় নিউমোনিয়া সংক্রমণ ছড়িয়েছে। মূলত, শিশুরা এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এই রোগের মূল উপসর্গ হল, জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট। মাস দুয়েকের মধ্যেই এই উপসর্গ নিয়ে চিনের হাসপাতালগুলিতে শিশু-রোগীর উপচে পড়া ভিড়। বলা যায়, আবার মহামারীর আশঙ্কায় আতঙ্কিত সে দেশের মানুষ। সম্প্রতি তানজানিয়া-সহ ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও শিশুদের একই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে।