ছত্তিশগঢ়: সরকারি অনুষ্ঠানে জয় শ্রীরাম ধ্বনি শুনে অপমানিত বোধ করে মঞ্চ ছেড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এবার সেই কাটা ঘায়েই নুনের ছিটে দিলেন মধ্য প্রদেশের স্পিকার রামেশ্বর শর্মা (Rameshwar Sharma)। রবিবার তিনি রামায়ণ (Ramayana)-র একটি কপি মুখ্যমন্ত্রীকে কুরিয়্যার করেন। বলেন, রাম নামের বিরোধিতা করা মুখ্যমন্ত্রী ঠিক হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে এসে কুড়িদিনের জন্য রামায়ণ পাঠের প্রস্তাবও দেন তিনি।
নেতাজীর জন্মদিন পালন ঘিরে বঙ্গ রাজনীতিতে আগেই উত্তেজনার পারদ চড়েছিল। তৃণমূল বনাম বিজেপির লড়াইয়ের মাঝেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)-র রাজ্য সফরে ভিক্টোরিয়ার অনুষ্ঠানে রীতি মেনেই আমন্ত্রণ করা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সবকিছু ভালভাবে চললেও তাল কেটে যায় মুখ্যমন্ত্রীকে বক্তব্য রাখার আমন্ত্রণ জানানোর পরই। মঞ্চে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই দর্শকাসনের একাংশ “জয় শ্রী রাম” বলে ধ্বনি দিতে থাকেন। আর এই ঘটনাতেই রীতিমতো ক্ষেপে যান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “এটা সরকারি অনুষ্ঠান। তবে এভাবে আমন্ত্রণ করে অপমান না করাই ভাল।” প্রতিবাদে তিনি ভাষণ না দিয়েই মঞ্চ থেকে নেমে যান।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে এভাবে সরকারি মঞ্চে অপমান করায় সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন অন্যান্য বিরোধীদলগুলির নেতারাও। এরই মাঝে আজ ফের একবার মুখ্যমন্ত্রীকে খোঁচা দিয়েই মধ্য প্রদেশ (Madhya Pradesh)-র সংসদের স্পিকার রামেশ্বর শর্মা তাঁকে রামায়ণের একটি কপি উপহার স্বরূপ পাঠালেন। একইসঙ্গে উপদেশ দিলেন, মুখ্যমন্ত্রী যেন মন দিয়ে বইটি পড়েন। শ্রী রামের নাম নিয়ে তিনি যেন অস্বীকার না করেন, এই উপদেশও দেন তিনি।
#WATCH | Madhya Pradesh Protem Speaker Rameshwar Sharma says he is sending a copy of Ramayana to West Bengal CM Mamata Banerjee; says, “Mamata Didi, are you not chanting Jai Shri Ram due to pressure from extremists? Agar aap Ram bolne se chukengi to apka Jai Shri Ram ho jayega.” pic.twitter.com/R70rF8lAnd
— ANI (@ANI) January 24, 2021
আরও পড়ুন: পুলিসের হাতে তুলে দিতেই যুবকের সুর বদল, ‘কৃষকরা খুব মেরেছে’
জয় শ্রী রাম ধ্বনিতে মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতার কারণ হিসাবে তিনি বলেন, “নিজের ভোট ব্যাঙ্কের জন্যই মুখ্যমন্ত্রী রামনামের বিরোধিতা করছেন।” মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি প্রশ্ন করেন, ” আপনার উপর কি বাংলাদেশ থেকেও চাপ আসছে? কট্টরপন্থী মুসলিমদের চাপেই কি ভগবান শ্রী রামের নাম নিয়ে এত সমস্যা আপনার? কারোর চাপে থাকবেন না। রাম নাম নিতে অস্বীকার করলে আপনার জয় শ্রীরাম হয়ে যাবে।”
একইসঙ্গে তিনি বলেন, “যাঁরা পূর্বে শ্রী রামের নাম নিয়ে বিরোধিতা করেছিল, আজ তাঁদের কী হাল, তা সবাই জানে। রাবণের থেকে বড় রাজত্ব কি কারোর ছিল? কিন্তু তিনি শ্রীরামের নামে আপত্তি জানিয়েছিলেন এবং তারপর কী দশা হয়েছিল, তা সবার জানা।”
সরকারি অনুষ্ঠানে জয় শ্রীরাম ধ্বনি কেন দেওয়া হল, এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “সরকারি অনুষ্ঠানে ভগবান শ্রীরামের নাম নেওয়া যাবে না, একথা কে বলেছে? আমি নিজেও একজন স্পিকার, তবুও আমি গর্বের সঙ্গে জয় শ্রী রাম বলছি।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রামনাম শোনার উপকারিতার কথা বলে তিনি জানান, ২০ দিনের জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি গিয়ে রামায়ণ পাঠ করে আসতে পারেন। শ্রীরামের নাম শুনলে সকলেরই উপকার হবে।
আরও পড়ুন: বাংলায় আইনের শাসন নেই, সুপ্রিম কোর্টে মামলা ঠুকল বিজেপি