দলের ভাঙনের সঙ্গে সঙ্গে পরিবারেও ধরেছিল ভাঙন। সেই ভাঙনের আঁচ এসে পড়েছিল লোকসভা ভোটের আঙিনায়। মহারাষ্ট্রের বড়মতী কেন্দ্রে এমনই ঘটনার সাক্ষী থেকেছে দেশবাসী। সৌজন্যে এনসিপি-র ভাঙন। শরদ পাওয়ারের এনসিপি-র হয়ে ওই কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছিলেন শরদের সুপ্রিয়া সুলে। তিনি ওই কেন্দ্র থেকে এর আগেও তিন বার জিতে সাংসদ হয়েছিলেন। সেই কেন্দ্রে এ বার তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী হন অজিত পাওয়ারের স্ত্রী সুনেত্রা পওয়ার। অর্থাৎ বড়মতী এ বার লড়াই হয়েছে ননদ ও বৌদির। সেই লড়াইয়ে সাপ-লুডোর মতো ওঠানামা চলেছে সারা দিন ধরে। অবশেষে ননদেরই জয় হয়েছে। এনসিপি-র শরদ পাওয়ারের গোষ্ঠীর উপরই আস্থা রেখেছেন বড়মতীবাসী। কেবল বড়মতী নয় গোটা মহারাষ্ট্রেই ফলই জানান দিচ্ছে বিদ্রোহী ভাইপো নয়, বর্ষীয়ান কাকার উপরেই আস্থা রয়েছে মারাঠাদের।
শরদ পাওয়ার ছাতার তলা থেকে বেরিয়ে বিজেপি-র ছাতার তলায় ভিড়েছিলেন অজিত পওয়ার। তা করে মহারাষ্ট্রে উপমুখ্যমন্ত্রী হন। এনসিপি দলের মালিকানা নিয়েও কাকা শরদ ও ভাইপো অজিতের মধ্যে শুরু হয় টানাপোড়েন। ঠিক যেমন হয়েছিল শিবসেনা নিয়ে। একই রকম টানাপোড়েন থেকেই ভাগ হয়ে যায় শিবসেনা ও এনসিপি। কিন্তু দুই দলের বিদ্রোহী গোষ্ঠীই মূল গোষ্ঠীর থেকে আসনের নিরিখে পিছিয়ে। শরদ পাওয়ারের এনসিপি যেখানে জিতেছে ৭টি আসন। সেখানে অজিতের এনসিপি পেয়েছে মাত্র একটি আসন। শিবসেনার উদ্ধব শিবির পেয়েছে ৯টি আসন। সেখানে একনাথ শিণ্ডের শিবির পেয়েছে ৭টি আসন। মহারাষ্ট্রে সবথেকে বেশি আসন পেয়েছে কংগ্রেস (১৩টি)। ১০ আসন পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি।
বড়মতী আসনে শরদের মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে জিতে টানা চতুর্থবারের জন্য সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। ৪৩ হাজারের বেশি ভোটে তিনি হারিয়েছেন দাদা অজিতের স্ত্রী সুনেত্রাকে। গত তিন বার জয় যতটা সহজে এসেছিল সুপ্রিয়ার কাছে, এ বার মোটেই তা ছিল না। পরিবারের লোকের থেকেই কঠিন চ্যালেঞ্জ এসেছে তাঁর দিকে। কিন্তু তার মোকাবিলা করে নিজের আসন ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছেন শরদ কন্যা সুপ্রিয়া।