নাটকীয় ভঙ্গিতে বদল হয়েছে মহারাষ্ট্রের সরকারের। সুপ্রিম কোর্টের তরফে আস্থাভোটের নির্দেশ দেওয়ার পরই বুধবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরে। পরেরদিনই মহারাষ্ট্রের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন একনাথ শিন্ডে। বাকি ছিল কেবল আস্থাভোট। আজ, সোমবারই মহারাষ্ট্রের বিধানসভায় হতে চলেছে আস্থাভোট। ইতিমধ্যেই বিধানসভার জরুরি অধিবেশন শুরু হয়ে গিয়েছে।
আস্থা ভোটে ‘দলীয় হুইপ’ অমান্য করার জন্য এবার শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে শিবসেনা বিধায়ক উদ্ধব-পুত্র আদিত্য ঠাকরেকে। দলীয় নির্দেশ অমান্য করে মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের পক্ষে ভোট না দেওয়ার জন্য বরখাস্ত করা হতে পারে মহারাষ্ট্রের সদ্যপ্রাক্তন পর্যটন মন্ত্রীকে।
বিস্তারিত পড়ুন Aaditya Thackeray: বরখাস্ত হতে পারেন উদ্ধব-পুত্র আদিত্য! যেতে পারে বিধায়কর পদও, আস্থা ভোট শেষ হতেই নতুন জল্পনা
আস্থা ভোটে জয়ের পর মহারাষ্ট্রের নব নির্বাচিত উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীসের গলায় ধরা পড়ল আত্মবিশ্বাসী সুর। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে তিনি জানিয়েছেন, “আমি বলেছিলাম, আমি ফিরে আসব, সেই সময় অনেকেই আমাকে নিয়ে বিদ্রুপ করেছিল। দেখুন আমি নিজে ফিরেছি, সঙ্গে বাকিদেরও নিয়ে এসেছি।”
আস্থা ভোটে বিপুল জয়ের পর মহারাষ্ট্রের নতুন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেকে সবরকমভাবে সাহায্য় করার কথা জানালেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস। তিনি জানিয়েছেন, ক্ষমতা নিয়ে একনাথের সঙ্গে তাঁর কোনও লড়াই নেই। ইডির তলব নিয়ে শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউতকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
ভোট দিতে আসলেনই না বেশ কিছুজন বিধায়ক। কংগ্রেসের বিজয় ওয়াদেত্তিয়ার ও জ়িশান সিদ্দিকি আসেননি ভোট দিতে। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী অশোক চাভন ভোট শেষ হওয়ার পর বিধানসভায় এসে পৌঁছন। এনসিপির সংগ্রাম জগতপকেও দেখা যায়নি। অথচ গতকাল চার নেতাই স্পিকার নির্বাচনে উপস্থিত ছিলেন।
আস্থাভোটে বিপুল সমর্থন পাওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানালেন বিজেপি নেতা তথা মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস। তিনি বলেন, “সকল বিধায়ককে অনেক ধন্যবাদ জানাই শিন্ডে সরকারের প্রতি সমর্থন জানানোর জন্য। একনাথ শিন্ডে একজন বিশ্বস্ত শিব সৈনিক। উনি বালা সাহেব ঠাকরের নীতি অনুসরণ করেই চলেন।”
শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বাল ঠাকরের ছেলে উদ্ধব ঠাকরের পক্ষে ভোট পড়ল ৯৯টি। ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকেন সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক আবু আজমি ও এআইএমআইএম বিধায়ক শাহ তারিক আনওয়ার।
আস্থাভোটে ১৬৪ ভোট পেল একনাথ শিন্ডে-বিজেপি জোট। বিধানসভায় সংখ্য়াগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য প্রয়োজন ১৪৪টি ভোট। অর্থাৎ প্রয়োজনীয় ভোটের থেকেও ২০টি ভোট বেশি পেয়েছে শিন্ডে শিবির।
মহা বিকাশ আগাড়ি সরকারের সঙ্গে থাকলেও, আস্থাভোটে শিন্ডে-ফড়ণবীস সরকারের পক্ষেই ভোট দিল বহুজন বিকাশ আগাড়ি দল।
ভোটগ্রহণের শুরুতেই ঝোড়ো ব্যাটিং একনাথ শিন্ডে শিবিরের। ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্য়েই শিন্ডে শিবিরের পক্ষে ১২০ বিধায়ক ভোট দেন।
উদ্ধব ঠাকরের কাছে আনুমানিক ১২০ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। এরমধ্যে এনসিপি, কংগ্রেসের সমর্থন রয়েছে। অন্যদিকে, একনাথ শিন্ডের কাছে ১৬৩ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। এরমধ্যে বিজেপি, শিবসেনার বিক্ষুব্ধ বিধায়ক ও প্রহার পার্টির বিধায়করা রয়েছেন।
আস্থাভোটের ঠিক আগেই ফের দলবদল। উদ্ধব ঠাকরের শিবির ছেড়ে নতুন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের শিবিরে নাম লেখালেন সন্তোষ বাঙ্গর। এ দিন সকালেই তাঁকে শিন্ডে শিবিরের বিধায়কদের সঙ্গে হোটেল থেকে বেরাতে দেখা যায়। আস্থাভোটেও উদ্ধব ঠাকরের বদলে তিনি একনাথ শিন্ডেকেই ভোট দেবেন বলে জানা গিয়েছে।
বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা হতে পারেন এনসিপি নেতা অজিত পওয়ার, এমনটাই সূত্রের খবর।
মহারাষ্ট্র বিধানসভায় শুরু হল আস্থাভোট। ইতিমধ্য়েই বিধানসভায় পৌঁছে গিয়েছেন বিধায়করা।