মুম্বই: খুলে যাচ্ছে মহারাষ্ট্রের যাবতীয় ধর্মীয় স্থান। আগামী ৭ অক্টোবর থেকে মহারাষ্ট্রের সব ধর্মীয় স্থান, প্রার্থনাস্থান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে রাজ্যের প্রশাসন। অর্থাৎ, নবরাত্রির প্রথম দিন থেকেই খুলে যাচ্ছে মহারাষ্ট্রের সব ধর্মীয় স্থান। তবে এ ক্ষেত্রে সবরকম করোনা বিধি মেনে চলতে হবে পূন্যার্থীদের।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের দফতর থেকে এক টুইটে জানানো হয়েছে, নবরাত্রির প্রথম দিন (৭ অক্টোবর, ২০২১) থেকে রাজ্যের সমস্ত ধর্মীয় স্থান করোনা বিধি মেনে পূন্যার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই মহারাষ্ট্রের ধর্মীয় স্থানগুলি খুলে দেওয়ার জন্য মহারাষ্ট্র সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছিল বিজেপি। বিশেষ করে গণেশ চতুর্থীর সময় গোটা মহারাষ্ট্রে যেভাবে কড়াকড়ি করা হয়েছিল, তাতে চটে গিয়েছিলেন অনেক বিজেপি নেতাই।
অনেকেই মনে করেছিলেন, নবরাত্রিতেও একইরকম কড়াকড়ি থাকবে। কিন্তু মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে আজই ঘোষণা করা হয়, নবরাত্রির প্রথম দিন, অর্থাৎ ৭ অক্টোবর থেকে খুলে দেওয়া হবে সমস্ত ধর্মীয় স্থান।
গণেশ চতুর্থী মহারাষ্ট্রের অন্যতম বড় উৎসব। আর সেই উৎসবে এবার ভাটা পড়ায় উদ্ধব ঠাকরের মহারাষ্ট্র সরকার হিন্দু বিরোধী বলে আক্রমণ করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নারায়ণ রানে। মহারাষ্ট্রে গনেশ পুজো প্রতিবছরই সমারহের সঙ্গে পালিত হয়। বড় বড় মূর্তি। ভিড়। উৎসবের আমেজ। কিন্তু এবার করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় কড়াকড়ি করে দেওয়া হয়েছিল। গনেশ পুজোয় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল বাণিজ্য নগরীতে। আর এই নিয়েই নারায়ণ রানের তোপের মুখে পড়তে হয়েছিল উদ্ধব ঠাকরের সরকারকে।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মহাবিকাশ আগাড়ি জোট সরকারের উপর ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছিলেন, “উৎসবের মরশুমে মহারাষ্ট্র সরকার কড়াকড়ি করে দিয়েছে। এটা ঠিক নয়, অন্যায়। এই সরকার হল হিন্দু বিরোধী সরকার। শুধু হিন্দুদের উৎসবের সময়েই তাদের কড়াকড়ির কথা মনে পড়ে। হিন্দু ছাড়া অন্য কোনও ধর্মের উৎসবের সময় কোনও কড়াকড়ি নেই।”
নারায়ণ রানে শিবসেনার উদ্দেশে বলেছিলেন, ” শিবসেনা শুধু মুখেই হিন্দুত্বের কথা বলে। আসলে যেদিন থেকে শিবসেনা বিজেপির থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছে, সেদিন থেকে তাদের হিন্দুত্ব শেষ হয়ে গিয়েছে।”
এবার করোনা পরিস্থিতিতে গণেশ চতুর্থীতে ভাটা পড়েছিল। বড় বড় প্রতিমা ছিল না। চার ফুটের বেশি উঁচু প্রতিমা করা যাবে না বলে আগেই কড়া নির্দেশ দিয়ে রেখেছিল প্রশাসন। অনলাইনেই গনেশ দর্শন করতে হয়েছে। ১৪৪ ধারা জারি হওয়ায় ঘরবন্দী হয়েই কাটাতে হয়েছে গনেশ চতুর্থী।
প্রতিমা নিরাঞ্জনের সময়েও একাধিক কড়াকড়ি করা হয়েছিল। স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছিল, প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় এমন কোনও শোভাযাত্রা করা যাবে না, যা সাধারণ মানুষকে আকর্ষণ করে। নিরঞ্জনের জন্য প্রত্যেক মণ্ডপ পিছু ১০ জনের থাকার অনুমতি দিয়েছিল প্রশাসন।
আরও পড়ুন : মহারাষ্ট্র সরকার হিন্দু বিরোধী, তোপ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর