নয়া দিল্লি: অল্প সংখ্যক কৃষককে নিয়ে দিল্লির সীমান্তে শুরু হওয়া আন্দোলন নিয়ে এখন বিশ্ব জুড়ে আলোচনা চলছে। পপ তারকা রিহানা, গ্রেটা থুনবার্গদের টুইট সেই আন্দোলনে নতুন মাত্রা জুগিয়েছে। বিদেশি সমর্থনের পর সরব হয়েছেন একাধিক ভারতীয় তারকাও। কিন্তু, সে দিন কেন লতা, সচিন, অক্ষয় কুমার, সুনীল শেট্টিরা একই গোত্রের টুইট করলেন, তা সন্দেহের চোখে দেখছে মহারাষ্ট্র সরকার।
ওই দিনের সব টুইটগুলির বিষয়ে তদন্ত করার কথা জানালেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। মহারাষ্ট্র কংগ্রেসের তরফে এই তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে একই রকম টুইট কেন করলেন ভারতীয় তারকারা? এর পিছনে কি বিজেপির কোনও প্রভাব আছে? তা নিয়েই তদন্ত হবে। একাধিক টুইটে ‘অ্যামিকেবল’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, যা মোটেই সরল দৃষ্টতে দেখছে না বিরোধীরা। টুইট গুলিতে মিল থাকার বিষয়টির পিছনে কারণ খুঁজছে তারা।
আরও পড়ুন: সমাজে নতুন শ্রেণি ‘আন্দোলনজীবী’, আন্দোলন থেকে আন্দোলনে লাফ দেওয়াই কাজ: প্রধানমন্ত্রী
সোমবার এই বিষয়ে একটি বৈঠকও করেছেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ভাৰ্চুয়ালি সেই বৈঠক করেছেন তিনি। কংগ্রেস নেতা সচিন সাওয়ান্ত এ দিন বলেন, “অক্ষয় কুমার ও সাইনা নেহওয়াল অবিকল একই টুইট করেছেন আর সুনীল শেট্টি টুইটে একজন বিজেপি নেতাকে ট্যাগ করেছেন।” অক্ষয় ও সাইনা টুইটারে লেখেন, “কৃষকেরা দেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সমস্যার সমাধান করতে সবরকমের প্রচেষ্টা চলছে। যারা বিভেদ তৈরি করছে, তাদের কথায় আমল না দিয়ে এক বন্ধুত্বপূর্ণ (অ্যামিকেবল) সমাধানকে সমর্থন জানানো উচিৎ।” আর হিতেশ জৈন নামে এক বিজেপি নেতাকে ট্যাগ করেছেন সুনীল শেট্টি।
রিহানার টুইটের পর কৃষক আন্দোলনের স্বপক্ষে টুইট করতে দেখা যায় গ্রেট থুনবার্গ, মিয়া খলিফা, মার্কিন আইনজীবী তথা কমলা হ্যারিসের আত্মীয় মিনা হ্যারিস, মার্কিন ব্লগার আমান্দা সারনি, ব্রিটিশ গায়ক জে সিয়ান- সহ অনেককেই।
এরপরই পাল্টা টুইট করেন ভারতীয় তারকারা। সেই দলে ছিলেন লতা মঙ্গেশকর, করন জোহর, সচিন তেন্ডুলকর, বিরাট কোহলি, আজিঙ্কা রাহানে, রোহিত শর্মা-সহ অনেকেই।
আরও পড়ুন: বিয়ে বাড়িতে রফির গানে কন্যাদানের মাহাত্ম্য বোঝালেন কৈলাস
বিদেশি তারকাদের টুহটগুলি সামনে আসার পর প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল বিদেশ মন্ত্রক। বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছিল, এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী নিজেদের অ্যাজেন্ডা চালানোর জন্য এই ধরনের আন্দোলনকে ইন্ধন জোগাচ্ছে। এ ছাড়া কেন্দ্রের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, দেশের অল্প শতাংশ কৃষকই এই আইনগুলির বিরোধিতা করছেন এবং বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন। তাই সঠিক তথ্য যাচাই করে বিক্ষোভের বিষয়টি জানার পরই এ নিয়ে মন্তব্য করা উচিত বলে উল্লেখ করেছিল বিদেশ মন্ত্রক। সেই বিবৃতি নিজেদের টুহটের সঙ্গে পোস্ট করেছিলেন অক্ষয় কুমার ও সাইনা নেহওয়াল।
এদিকে, সোমবারই সংসদে এই বিষয়ে মুখ খোলেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে দেশে এক নতুন FDI দেখতে পাচ্ছি।” আন্দোলনে বিদেশি প্রভাবের বিরুদ্ধে মুখ খুলে মোদী বলেন, “আমাদের ‘ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট’ প্রয়োজন, কিন্তু ‘ফরেন ডেস্ট্রাক্টিভ ইডিওলজি’র দরকার নেই।”