নয়া দিল্লি: এবার তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদ্রাইকে তলব করল সিবিআই। গত মাসে, ‘ঘুষের বদলে প্রশ্ন’ করার অভিযোগে এথিক্স কমিটির তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়ার পর, লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল মহুয়া মৈত্রকে। তাঁর বিরুদ্ধে শিল্পপতি দর্শন হিরানন্দানির কাছ থেকে নগদ অর্থ এবং দামী উপহার সামগ্রী ঘুষ হিসেবে নিয়ে, সংসদে গৌতম আদানি এবং মোদী সরকারের বিরুদ্ধে প্রশ্ন করা অভিযোগ করেছিলেন বিজেপি সংসদ নিশিকান্ত দাস। জয় অনন্ত দেহদ্রাই তাঁকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। সেই চিঠির ভিত্তিতেই এই অভিযোগ করেছিলেন বিজেপি সাংসদ। সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী তাঁর প্রাক্তন বন্ধু বলে জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। সিবিআই তাঁকে ২৫ জানুয়ারি তাঁর বক্তব্য রেকর্ড করার জন্য ডেকেছে।
এর আগে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর সিবিআইয়ের কাছে জয় অনন্ত দেহদ্রাই জানিয়েছিলেন, মহুয়া মৈত্র, তাঁর সংসদের লগইন এবং পাসওয়ার্ডের বিশদ, শিল্পতি দর্শন হিরানন্দানিকে দেওয়ার কথা মনে নিয়েছেন। তবে, দাবি করেছেন, ওই শিল্পপতির কাছ থেকে তিনি কোনও নগদ অর্থ নেননি। তিনি আরও অভিযোগ করেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছ মহুয়া মৈত্রর। সেই যোগাযোগ ব্যবহার করে, তাঁর উপর নজরদারি চালাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী। দাবি করেছিলেন, তিনি যাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, বা তাঁর সঙ্গে যাঁরা যোগাযোগ করছেন, তাদের উপর নজর রাখা হচ্ছে। তাদের কল রেকর্ড পরীক্ষা করা হচ্ছে। গত অক্টোবরের শুরুতে মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে তাঁর কাছে থাকা সমস্ত প্রমাণ লোকসভার নীতিশাস্ত্র কমিটির সামনে রেখেছিলেন জয় অনন্ত দেহদ্রাই।
এর আগে, পুলিশের কাছে জয় অনন্ত দেহদ্রাইয়ের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশ, চুরি, অশ্লীল বার্তা পাঠানো এবং দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করেছিলেন মহুয়া মৈত্র। তাদের সম্পর্ক শেষ হওয়ার পর, দুজনের মধ্যে যে তিক্ততা তৈরি হয়েছিল, তা থেকেই জয় অনন্ত দেহদ্রাই এই সকল অভিযোগ করেছেন বলে দাবি করেন মহুয়া।
এক হলফনামায়, শিল্পপতি দর্শন হিরানন্দানি বলেছিলেন, তৃণমূল সাংসদ হিসাবে তাঁর ইমেল আইডি শেয়ার করেছিলেন মহুয়া। মহুয়ার ইমেইলে তিনি বিভিন্ন তথ্য পাঠাতেন। সেই তথ্য ব্যবহার করে সংসদে প্রশ্ন করতেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর সংসদীয় ইমেইলের লগইন বিশদ ভাগ করে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন মহুয়া মৈত্রও। তবে, তিনি দাবি করেছেন, ওই সকল তথ্য যে কারও সঙ্গে ভাগ করা যাবে না, তা তিনি জানতেন না। কারণ এই সংক্রান্ত কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। লোকসভার এথিক্স কমিটি অবশ্য জানায়, তাঁর ইমেইল বিদেশ থেকেও ব্যবহার করা হয়েছে। মহুয়া তাঁর সংসদীয় ইমেইলের লগইন বিশদ ভাগ করায় দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারত।