নয়া দিল্লি: ‘ক্যাঙ্গারু কোর্টে প্রি-ফিক্সড ম্যাচ’, ‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’ মামলায় এথিক্স কমিটির রিপোর্ট নিয়ে এমনটাই বললেন মহুয়া মৈত্র। এদিন, এই মামলায় তাঁর সাংসদ পদ খারিজের সুপারিশ করেছে সংসদীয় এথিক্স কমিটি। বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর), এথিক্স কমিটির ৬ সদস্য মহুয়া মৈত্রকে বরখাস্ত করার পক্ষে ভোট দেন। এর মধ্যে ৫ জন বিজেপির সাংসদ এবং এক জন কংগ্রেসের সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ। অন্যদিকে, বিরোধী পক্ষের বাকি ৪ জন মহুয়াকে বরখাস্ত করার বিরুদ্ধে ভোট দেন। এথিক্স কমিটি ৫০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে মহুয়া মৈত্র ‘অনৈতিক ও খুব আপত্তিকর’ কাজ করেছেন।
এথিক্স কমিটি যে এই ধরণের একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে, বুধবারই তা সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। এদিন, সেই জল্পনাতেই সিলমোহর পড়ার পর, প্রথম প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূলের লোকসভা সাংসদ মহুয়া মৈত্র বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা ‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’-র অভিযোগের প্রেক্ষিতে, লোকসভার এথিক্স কমিটির যে রিপোর্ট তৈরি করেছে, তার ভিত্তিতে তাঁকে বহিষ্কার করা হতে পারে। যদি তা হয়, সেই ক্ষেত্রে তিনি আরও বড় জনমত নিয়ে লোকসভায় ফিরে আসবেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “ভারতে সংসদীয় গণতন্ত্রের মৃত্যু হল।”
এথিক্স কমিটির ৫০০ পৃষ্ঠার রিপোর্টে মহুয়া মৈত্রার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলিকে অত্যন্ত গুরুতর বলে অভিহিত করা হয়েছে। তিনি তাঁর সংসদীয় ইমেইলের লগইন ডিটেইলস শিল্পপতি দর্শন হিরানন্দানির সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, মহুয়া মৈত্র সংসদে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যে সকল প্রশ্ন করেছেন, সেই প্রশ্ন গুলি তাঁর অ্যাকাউন্টে পোস্ট করার কথা স্বীকার করেছেন হিরানন্দানি। দুবাই থেকে তাঁর অ্যাকাউন্টে ৪৭বার লগইন করা হয়েছিল। অথচ সেই সময় মহুয়া মৈত্র নিজে সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। তাই, তাঁকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা উচিত।
এর আগে, ২ নভেম্বর এথিক্স কমিটির সামনে হাজিরা দিয়েছিলেন মহুয়া মৈত্র। জবানবন্দি নথিভুক্ত করেন। তবে, তাঁকে জেরা করার সময় তিনি এথিক্স কমিটির বৈঠক ত্যাগ করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন এথিক্স কমিটি সদস্য হিসেবে থাকা ৪ বিরোধী সদস্যও। চেয়ারম্যান বিনোদ সোনকার, মহুয়া মৈত্রকে অপ্রাসঙ্গিক এবং অনৈতিক ব্যক্তিগত প্রশ্ন করেছেন বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। মহুয়া আরও দাবি করেছিলেন, দর্শন হিরানন্দানি তাঁকে বন্ধু হিসেবে কিছু উপহার দিয়েছেন, কিন্তু কোনওদিন অর্থ দেননি। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, দর্শন হিরানন্দানির কার্যালয়ে তিনি প্রশ্ন পাঠাতেন, সেগুলি টাইপ করে তাঁর সংসদীয় অ্যাকাউন্টে পাঠানোর জন্য।