নয়া দিল্লি: রাত জেগে ১০০-রও বেশি সিসিটিভি ফুটেজ (CCTV Footage) খতিয়ে দেখে অবশেষে ধর্ষককে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবারই পুলিশের কাছে ছয় বছরের এক নাবালিকাকে ধর্ষণের (Physical Assault) অভিযোগ আসে। এরপরই চিরুনি তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। শতাধিক সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে একদিনের মধ্যেই অপরাধীকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছয় বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত ওই যুবককে আজ হরিয়ানার রোহতক (Rohtak) থেকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতের নাম সূরজ (২০)। দিল্লির রঘুবীর নগরের বাসিন্দা ওই যুবক গতকাল ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হয়ে গিয়েছে, এ কথা জানতে পেরেই রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু বেশিদূর পালানোর আগেই প্রতিবেশী রাজ্য থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল শাখা ও এএটিএস।
পুলিশি জেরায় ওই যুবক জানিয়েছে, সে নির্যাতিতা বা তাঁর পরিবারকে চিনত না। রাস্তায় ওই নাবালিকাকে দেখেই তাঁকে খাবারের লোভ দেখিয়ে একটি ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যায় এবং তাঁকে ধর্ষণ করে। অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে পকসো আইন সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দিল্লি পুলিশের ডিসিপি বলেন, “আমাদের কাছে কোনও সূত্র বা প্রমাণ ছিল না। কেবল সিসিটিভি ফুটেজেই ওই যুবককে দেখা গিয়েছিল। টানা ৩৬ ঘণ্টা ধরে আমরা ১০০-রও বেশি সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে ওই যুবকের স্পষ্ট একটি চিত্র বের করি এবং সেই চিত্রের ভরসাতেই তল্লাশি চালিয়ে ওই যুবককে রোহতক থেকে গ্রেফতার করা হয়। ওই যুবক নির্যাতিতার লোকালয়ের বাসিন্দা নয়। তাঁর কোনও ফোন নম্বর বা পরিচয়পত্রও আমাদের কাছে ছিল না, যার সূত্র ধরে তাঁকে সহজেই খুঁজে বের করা যেত।”
এদিকে, ওই নাবালিকা বর্তমানে দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তাঁর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
শনিবারই দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়, দিল্লির রনজিৎ নগর এলাকায় এক ছয় বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে পাড়ার একটি লঙ্গরখানায় খেতে গিয়েছিল ওই নাবালিকা। ওই নাবালিকার বাবা দিনমজুর হওয়ায় পরিবারে অনটন লেগেই থাকে। সেই কারণেই প্রায় সময় লঙ্গরে গিয়ে খাবার খেত তারা। শুক্রবার সকালে ওই নাবালিকা একাই যায় লঙ্গরে। কিন্তু বেশ অনেকক্ষণ বাদে সে যখন বাড়ি ফেরে, তখন পরিবারের সদস্যরা দেখেন পা থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।
প্রথমে তারা ভেবেছিলেন খেলাধুলো করতে গিয়েই হয়তো কোনওভাবে চোট পেয়েছে ওই নাবালিকা, কিন্তু মেয়ের চুপচাপ হয়ে যাওয়া ও ক্ষতস্থান পরিস্কার করতে গিয়েই গোটা ঘটনাটি তাদের কাছে স্পষ্ট হয়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা শারীরিক পরীক্ষা করার পর জানান যে, ওই ছয় বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়েছে।
হাসপাতালের তরফে পুলিশে খবর দেওয়া হলে তারা পরিবারের সঙ্গে কথা বলেই ঘটনাস্থানে যান। ওই এলাকায় লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করে পুলিশ দেখতে পায়, বাজার থেকে এক ব্যক্তিকে অনুসরণ করে যাচ্ছিল ওই নাবালিকা। ফুটেজে দেখে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, কোনও রকম প্রলোভন দেখিয়েই অভিযুক্ত ওই নাবালিকাকে আশেপাশের কোনও জায়গায় নিয়ে যায় এবং সেখানে তাঁকে ধর্ষণ করে।