Bombay High Court: ৪১ বার চুরি, ৮৩ বছরের কারাদণ্ড, তা-ও অভিযুক্তকে মুক্তি দিল হাইকোর্ট

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Jul 20, 2023 | 3:42 PM

Bombay High Court: প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে থেকেই চুরির অভিযোগ উঠেছিল আসলাম শেখের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। ২০১৪ সালের ৩ ডিসেম্বর তাকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর থেকে কারাগারেই ছিল আসলাম।

Bombay High Court: ৪১ বার চুরি, ৮৩ বছরের কারাদণ্ড, তা-ও অভিযুক্তকে মুক্তি দিল হাইকোর্ট
প্রতীকী ছবি (অলঙ্কলরণ - শুভ্রনীল দে)
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

মুম্বই: ৪১টি চুরির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে, ৮৩ বছরেরও বেশি কারাদণ্ড পেয়েছিল যুবক। বুধবার (১৯ জুলাই) তাকে মুক্তির আদেশ দিল বম্বে হাইকোর্ট। আসলে আক্ষরিক অর্থেই লঘু পাপে গুরু দণ্ড পেয়েছিল ওই ৩০ বছরের যুবক। ছোটখাট চুরির দায়ে ৮৩ বছরেরও বেশি সময়ের কারাদণ্ডকে আর কী বলা যায়! এই মামলায় ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার এক গুরুতর ফাঁকও ধরা পড়েছে। বুধবার রায় ঘোষণার সময়, বিচারপতি রেবতী মোহিতে-দেরে এবং বিচারপতি গৌরী গডসের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, নিম্ন আদালতগুলি ওই ব্যক্তিকে সমান্তরালভাবে সাজাগুলি ভোগ করার আদেশ দেয়নি। ফলে, জঘন্যতম হত্যার জন্য আজীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের থেকেও বেশি সাজা ভোগ করতে হচ্ছে সামান্য চুরির অপরাধে দণ্ডিত ওই ব্যক্তিকে। এটি ন্যায়বিচারের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছে ডিভিশন বেঞ্চ।

আদালতের পর্যবেক্ষণ, “যদি আবেদনকারীকে উল্লিখিত সবকটি মামলায় কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়, তাহলে তাকে প্রায় ৮৩ বছর ৩ মাস ৫ দিন কারাবাস করতে হবে। যেহেতু তার জরিমানা পরিশোধের ক্ষমতা নেই, তাই, সেই অর্থ প্রদান না করার জন্য তাকে আরও ১০ বছর ১ মাস ২৬ দিনের জেল খাটতে হবে। অর্থাৎ, মোট ৯৩ বছর ৫ মাস, মানে তাকে পুরো জীবন জেল খাটতে হবে। জেল থেকে বেরনোর কোনও আশাই থাকবে না। হত্যার জন্য কোনও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দোষীকে যে সাজা ভোগ করতে হয়, তার থেকেও বেশি। যদি এর অনুমতি দেওয়া হয়, তবে অবশ্যই ন্যায়বিচারের লঙ্ঘন করা হবে।”

প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগে থেকেই চুরির অভিযোগ উঠেছিল আসলাম শেখের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। ২০১৪ সালের ৩ ডিসেম্বর তাকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর থেকে কারাগারেই ছিল আসলাম। সম্প্রতি, লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটির মাধ্যমে বম্বে হাইকোর্টে সে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেছিল। আবেদন করেছিল যাতে ৪১টি মামলার সাজা সমান্তরালে চলে। তাকে ১,২৬,৪০০ টাকা জরিমানাও করা হয়েছিল। সেই টাকা দেওয়ার ক্ষমতা না থাকায়, সে ওই জরিমানা মকুবের আবেদনও করেছিল। আবেদনে আসলাম দাবি করেছিল, অনেক ক্ষেত্রেই তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। শিক্ষার অভাব এবং আর্থিক দুর্বলতাও তার এই অবস্থায় জন্য দায়ী। কারণ, সে ভেবেছিল এই সব দোষে তার যা সাজা হবে, সেই সাজা বিচারাধীন বন্দি হিসেবে তিনি ইতিমধ্যেই ভোগ করেছেন। তাই, শিগগিরই মুক্তি পাবেন। এই ভুল ধারণা থেকে, অনেক ক্ষেত্রেই তিনি দোষী না হয়েও, দোষ স্বীকার করে নিয়েছিলেন।

আসলাম শেখের মুক্তির আবেদন স্বীকার করে নেওয়ার পাশাপাশি, তার মামলাগুলি খতিয়ে না দেখেই রায় দেওয়ার জন্য নিম্ন আদালতগুলির সমালোচনা করেছে বম্বে হাইকোর্ট। হাইকোর্ট বলেছে, সাজাগুলি যাতে একসঙ্গে চলে, সেই বিষয়ে কোন নির্দেশনা ছাড়াই নিম্ন আদালতগুলি আসলামকে একের পর এক সাজা দিয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, কোনও আদালত আসলাম শেখের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করেনি। কিছু কিছু অপরাধের সময় সে কিশোর ছিল, তাও বিবেচনা করা হয়নি। একটিও মামলায় তাকে কোনও আইনি সহায়তা দেওয়া হয়নি। কোনও কোনও মামলায় বিচার শুরু হলে প্রমাণের অভাবে সে খালাসও পেতে পারত। ম্যাজিস্ট্রেটদের দায়িত্ব ছিল সাজা প্রদানের আগে অন্ততপক্ষে নথিপত্রগুলি একবার পরীক্ষা করা। বিশেষ করে আসামী দোষ স্বীকার করে নিলে, কাগজপত্র খতিয়ে দেখা খুব জরুরি বলে জানিয়েছে উচ্চ আদালত।

Next Article