অমরাবতী: করোনা (Corona Virus) আমাদের অনেক নতুন কিছু শিখিয়েছে। মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার ছাড়াও সকল সাধারণ মানুষ ‘লকডাউন’ নামের এক নয়া শব্দের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিল। পরস্পরের সংস্পর্শে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে এই আশঙ্কা থেকেই গোটা দেশেই প্রয়োজন অনুযায়ী স্থানীয় প্রশাসন লকডাউন (Lockdown) ঘোষণা করেছিল। লকডাউনের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও ওষুধের দোকান ছাড়া যাবতীয় দোকানপাট বন্ধ ছিল, সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল গণ পরিবহণ। সেই দুর্বিষহ দিনগুলির কথা ভাবলেই অনেকেরই মন খারাপ হয়ে যায়। করোনা সংক্রমণ কমেছে, তাই দীর্ঘদিন ধরে লকডাউনের সঙ্গে সাধারণ মানুষের যোগাযোগ নেই। তবে অন্ধ্র প্রদেশের একটি গ্রামের বাসিন্দারা এক অদ্ভূত কারণে নিজেদের গৃহবন্দি করেছেন। তাই প্রশাসন ঘোষণা না করলেও এই দক্ষিণী রাজ্যের ভেনেলাভালাসা গ্রাম অঘোষিত লকডাউনের ছবি চোখে পড়েছে। কেন ভেনেলাভালাসা গ্রামের বাসিন্দারা স্বঘোষিত লকডাউন পালন করছেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে অবাক করা তথ্য সামনে এসেছে। জানা গিয়েছ, এক মাংস খেকো পিশাচের ভয়ে, ওই গ্রামের বাসিন্দারা বাড়ির বাইরে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন। এক মাসের মধ্যে গ্রামের ৪ জন বাসিন্দার রহস্যজনক মৃত্যুর পর, বাসিন্দাদের মধ্যে পিশাচের আতঙ্ক গেঁথে গিয়েছে।
শুধু গ্রামের বাসিন্দারাই নয়, সরকার দফতরের বাসিন্দারাও এই আতঙ্কিত। সেই কারণে সরকারি অফিসও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকী কোনও বহিরাগতকে গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। স্কুল, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওড়িশা সংলগ্ন ভেনেলাভালাসা গ্রাম অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলায় অবস্থিত। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বেশ কয়েকদিন ধরেই গ্রামের বেশ কিছু বাসিন্দা অজানা জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং সেই জ্বরের কারণে ৪ জন মারা গিয়েছে। গ্রামবাসীদের ধারণা ওই অশুভ আত্মা গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছে। গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দারা ইতিমধ্যে পার্শ্ববর্তী ওড়িশার এক পুরোহিতের সঙ্গে আলোচনা করেই লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওই পুরোহিতের পরামর্শের গ্রামের চারদিকে লেবু ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ১৭ থেকে ২৫ এপ্রিল অবধি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ও গ্রামের সরকারি অফিস বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানার পর পুলিশ গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা সেগুলি খুলে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে। তাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে গ্রামের বাসিন্দার আপাতত সেইগুলি খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।