নয়া দিল্লি: নিউইয়র্ক থেকে দিল্লিগামী এয়ার ইন্ডিয়ার (Air India) উড়ানের ঘটনা ঘিরে চরম চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই বিমানেই ৭২ বছরের এক বৃদ্ধার গায়ে এক ব্যক্তি মদ্যপ অবস্থায় প্রস্রাব করে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। গত নভেম্বরের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে জানুয়ারিতে। আর এই ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তি শঙ্কর মিশ্রকে (Shankar Mishra) গতরাতে বেঙ্গালুরু সঞ্জয়নগর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। আপাতত তিনি এখন দিল্লি পুলিশের (Delhi Police) হেফাজতে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
শনিবার ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ (বিমানবন্দর) রবি কুমার সিং বলেছেন, “দিল্লি পুলিশের একটি টিম বেঙ্গালুরু থেকে শঙ্কর মিশ্রকে গ্রেফতার করেছে। তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয়েছ এবং এই ঘটনায় তদন্ত জারি রয়েছে।” অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বেঙ্গালুরু থেকে বিমান বন্দর থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। আজই তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ানে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই তাঁর বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করা হয় দিল্লি পুলিশের তরফে। তখন থেকেই বেঙ্গালুরুতে গা ঢাকা দিয়েছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত মিলল না রেহাই। দিল্লি পুলিশের হাতে ধরা পড়তেই হল।
এদিকে ছেলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগে মেনে নিতে নারাজ বাবা শ্যাম মিশ্র। তিনি মনে করেন মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে তাঁর ছেলে শঙ্কর মিশ্রকে। তিনি সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে জানিয়েছেন, “এটা সম্পূর্ণ মিথ্যে মামলা। আমার ছেলে ৩০-৩৫ ঘণ্টার জন্য ঘুমায়নি। রাতে খাবার খাওয়ার পর ও হয়তো ক্রুদের দ্বারা পরিবেশিত একটু মদ খেয়েছিল এবং ঘুমিয়ে পড়েছিল। এর থেকে আমি যা বুঝছি ও ঘুম থেকে ওঠার পরই এয়ারলাইনের কর্মীরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।” তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে প্রস্রাব করে দেওয়ার সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে শ্যাম বলেন, “আমার মনে হয় না ও এই কাজ করতে পারে। তিনি ৭২ বছর বয়সী এক মহিলা। ওর মায়ের মতো। ওর বয়স ৩৪ বছর। ও কীভাবে এই কাজ করতে পারে? ও বিবাহিত এবং ১৮ বছরের এক মেয়েও রয়েছে।”
এদিকে পাল্টা ব্ল্যাক মেইলের অভিযোগ তুলেছেন শ্যাম। তিনি বলেন, “তিনি (৭২ বছর বয়সী মহিলা) কিছু পরিমাণ টাকা চেয়েছিলেন এবং তাঁকে তা দেওয়াও হয়েছিল। আমি জানি না তারপর কী হয়েছিল। এরপরও হয়ত তাঁর কিছু দাবি ছিল যা পূরণ করা হয়নি। আর তাতেই রেগে গিয়েছেন বৃদ্ধা। ফলে এরকম হতেই পারে ওকে ব্ল্যাক মেইল করার জন্য এসব করা হচ্ছে।” এদিকে এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে শঙ্করের উপর ৩০ দিনের নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। এছাড়া একটি অভ্যন্তরীণ কমিটি গঠন করে এই ঘটনার তদন্ত চলছে। এই ঘটনার বিমানের ক্রুর তরফে কোনও গাফিলতি ছিল কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।