ইম্ফল: টানা তিন মাস ধরে অশান্তির আগুনে জ্বলছে মণিপুর (Manipur)। কুকি (Kuki) ও মেইতি (Meitei) সম্প্রদায়ের সংঘর্ষে ইতিমধ্যে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। চরম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মহিলারাও। দুই মহিলাকে নগ্ন করে হাঁটানোর ন্যক্কারজনক ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর এবার আরও এক মহিলার গণধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ্যে এল। নির্যাতিতা মহিলা নিজেই সেই ভয়াবহ ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন। ঘটনাটি শুধু প্রকাশ্যে জানানো নয়, থানায় গিয়ে ‘জিরো FIR’ দায়েরও করেছেন তিনি।
মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর জেলার মেইতি সম্প্রদায়ভুক্ত ৩৭ বছর বয়সি ওই মহিলা ৪-৫ জনের গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ। তিনি জানান, গত ৩ মে তাঁর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। প্রাণ বাঁচাতে সন্তানদের নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পালাতে যাওয়ার সময়ই গণধর্ষণের শিকার হন তিনি।
পুলিশের কাছে ওই মহিলা জানিয়েছেন, গত ৩ মে, অশান্তি শুরুর প্রথম দিনই সন্ধ্যায় তাঁর এবং প্রতিবেশীদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তখন প্রাণে বাঁচাতে নিজের দুই ছেলে এবং ছোট ভাইঝিকে সঙ্গে নিয়ে ওই মহিলা ও তাঁর জা ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। বাড়ি ছেড়ে দৌড়ে পালাতে গিয়ে ওই মহিলা রাস্তায় পড়ে যান। তাঁর ওঠার ক্ষমতা ছিল না। সেই সময় শত্রুপক্ষের ৪-৫ জনের একটি দল এসে তাঁদের ঘিরে ধরেন। মহিলা জানান, সন্তানদের নিয়ে তিনি জা-কে পালিয়ে যেতে বলেন। সন্তানদের বাঁচাতে তাদের নিয়ে তাঁর জা পালিয়ে গেলে ওই ৪-৫ জন মিলে তাঁকে গণধর্ষণ করে।
নৃশংস সেই ঘটনার পর শারীরিক ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন ওই মহিলা। আর কোথাও যাওয়া বা ঘটনা সম্পর্কে কাউকে কিছু বলার মতো ক্ষমতা তাঁর ছিল না। তারপর প্রশাসনের তরফে চিকিৎসকের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তাঁদের নজরে ওই মহিলা পড়েন। তারপর তাঁরাই ওই মহিলার শারীরিক চিকিৎসা ও কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করেন। এখনও শরণার্থী শিবিরে রয়েছেন ওই মহিলা। তবে বর্তমানে অনেকটাই স্থিতাবস্থায় ফিরেছেন তিনি। তাই বিষ্ণপুর থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, মণিপুরে মহিলাদের উপর অত্যাচার হয়েছে বলে এদিনই সংসদে স্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে কেন্দ্র ও রাজ্য মিলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। মণিপুরে আবার শান্তি ও উন্নয়ন ফিরে আসবে বলেও এদিন প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী।