ইম্ফল: মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরানো ও গণধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল গোটা দেশ। উঠেছে নিন্দার ঝড়। সরকারের সমালোচনায় সরব বিরোধীরা। ওই ভিডিয়ো ঘিরে তৈরি হয়েছে একাধিক বিতর্কও। ইতিমধ্যেই চারজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হলেও, ক্ষুব্ধ সাধারণ জনতা। বৃহস্পতিবারই এক অভিযুক্তের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। কুকি ও মেতেই জনজাতির মধ্যে সংরক্ষণ নিয়ে যে বিরোধ শুরু হয়েছিল তিন মাস আগে, তা কীভাবে এই নিন্দনীয় অপরাধের পর্যায়ে পৌঁছল, তা জানাল মণিপুর পুলিশ।
মণিপুর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, যে দুই মহিলাকে নিগ্রহ করা হয়েছে, তাঁরা কুকি-জো জনজাতির। নিগৃহীত দুই মহিলার মধ্য়ে একজনকে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলেই এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, দিল্লিতে একটি ধর্ষণের ভুয়ো খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। সেই ভুয়ো খবরে দিল্লির বদলে মণিপুরে ধর্ষণ হয়েছে বলে দাবি করা হয়। নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের মহিলাকে ধর্ষণের খবরের পাশাপাশি প্লাস্টিক শিটে মোড়ানো এক মহিলার ছবিও ধর্ষিত মহিলার ছবি বলে দাবি করা হয়। যদিও পরে জানা যায়, ধর্ষণের ঘটনাটি মণিপুরে নয়, দিল্লিতে ঘটেছে।
এদিকে, ওই ভুয়ো খবরের জেরেই দুই জনজাতির মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়, গত ৪ মে মণিপুরের কাঙ্গপোকপি জেলার বি ফাইনম গ্রামের পাঁচজনকে অপহরণ করা হয়। পুলিশের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৮০০ থেকে ১০০০ ক্ষিপ্ত জনতা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে, লুটপাট, ভাঙচুর চলে। একাধিক বাড়িও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। হামলাকারীরা মেতেই জনজাতির বলে অনুমান।
হামলা চলাকালীনই তিন মহিলা সহ পাঁচজন গ্রামবাসী জঙ্গলে পালিয়ে যান। পরে নেঙ্গপক সেকমাই পুলিশ তাদের উদ্ধার করে পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যাচ্ছিল, সেই সময়ই হামলাকারীরা তাদের পুলিশের হাত থেকে অপহরণ করে এবং অত্যাচার করে। অমানবিক অত্যাচারে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। দুইজন নয়, তিনজন মহিলাকেই বিবস্ত্র করা হয়। ২১ বছর বয়সী এক যুবতীকে গণধর্ষণ করে। ওই যুবতীর ভাই বাধা দিতে গেলে তাঁকেও খুন করা হয়।