বাস্তার: হাতে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। সঙ্গে ৮-১০ জন দেহরক্ষী। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে নিহত হলেন মাওবাদীদের অন্যতম সেই শীর্ষ নেতা চলাপতি। তাঁর মাথার দাম ছিল এক কোটি টাকা। চলাপতির সঙ্গে আরও ১৯ মাওবাদী নিহত হয়েছে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে। মাওবাদী দমন অভিযানে একে বড় সাফল্য বলে বর্ণনা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
গতকাল রাতে ছত্তীসগঢ় ও ওড়িশা সীমান্তের জঙ্গলে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালায়। সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (CRPF), ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড (DRG), ছত্তীসগঢ়ে CoBRA এবং ওড়িশার স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ (SOG) এই অভিযান চালায়। ওড়িশার নুয়াপদ জেলা থেকে ৫ কিমি দূরে ছত্তীসগঢ়ের কুলারিঘাট রিজার্ভ ফরেস্টে মাওবাদীদের উপস্থিতি নিয়ে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এই অভিযান চালানো হয়।
গুলির লড়াইয়ে ২০ মাওবাদীর মৃত্যু হয়। তাদের কাছ থেকে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদের তালিকায় রয়েছেন শীর্ষ মাওবাদী নেতা চলাপতি। তাঁর আসল নাম জয়রাম রেড্ডি। তবে আরও একাধিক নামে পরিচিত তিনি। রামচন্দ্র রেড্ডি, আপ্পারাও কিংবা রামু। তবে এইসব নাম নয়। তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত চলাপতি হিসেবে। বছর ষাটের চলাপতির জন্ম অন্ধ্র প্রদেশের চিত্তুরের মদনপাল্লেতে। ক্লাস টেন পর্যন্ত পড়েছেন। প্রথাগত শিক্ষা কম হলেও শীর্ষ মাওবাদী নেতা হয়ে উঠতে তা বাধা হয়নি।
নিরাপত্তা বাহিনীর বক্তব্য, বাস্তারের জঙ্গলকে হাতের তালুর মতো চিনতেন। চলাপতির সঙ্গে ৮-১০ জন দেহরক্ষী থাকত। পুলিশের বক্তব্য, মাওবাদীদের মধ্যে চলাপতির গুরুত্ব কতটা, দেহরক্ষীর সংখ্যা সেটা তুলে ধরছে। তাঁর কাছে অত্যাধুনিক AK-৪৭ ও এসএলআর রাইফেল থাকত। মাওবাদীদের স্ট্র্যাটেজি তৈরি অপারেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতেন চলাপতি।
কয়েক মাস আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে ভারত মাওবাদী-মুক্ত হবে। মাওবাদী দমন অভিযান আরও জোরদার করা হয়েছে। ২০২৪ সালে কমপক্ষে ৮০০ মাওবাদীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আত্মসমর্পণ করেছেন ৮০২ জন। গতবছর নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে ২১৯ মাওবাদী নিহত হয়েছে। তার মধ্যে বাস্তার অঞ্চলেই নিহত হয়েছে ২১৭ জন মাওবাদী। এবার মাওবাদী দমন অভিযানে ২০ মাওবাদীর মৃত্যুর পর অমিত শাহ এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, মাওবাদী-মুক্ত ভারত গঠনে বড় সাফল্য পেল নিরাপত্তা বাহিনী।