পটনা: সরকারি হাসপাতালে চরম অব্যবস্থা। চিকিৎসকের ভয়ঙ্কর গাফিলতি, মৃত্যুমুখ থেকে ফিরলেন প্রসূতি। ফের অস্ত্রোপচার করাতে হল মহিলার। চিকিৎসকের গাফিলতি সামনে আসতেই হাসপাতাল ঘিরে বিক্ষোভ দেখাল রোগী পরিবার। বেশ কিছুক্ষণ অবরোধ করা হয় জাতীয় সড়কও। ঠিক কী ঘটেছিল ওই প্রসূতির সঙ্গে?
উত্তর প্রদেশের পর এবার বিহারে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠল। জানা গিয়েছে, বিহারের জেহানাবাদ সদর হাসপাতালে সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য ভর্তি হয়েছিলেন প্রসূতি মহিলা। সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের সময় চিকিৎসক ওই মহিলার পেটেই গজ কাপড় রেখে দেন। ওই অবস্থাতেই তাঁর পেট সেলাই করে দেওয়া হয়। পরে ওই মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়লে, আল্ট্রা সোনোগ্রাফি করানো হয়। তখনই চিকিৎসকের গাফিলতির বিষয়টি সামনে আসে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান রোগীর পরিবার ও বিক্ষুব্ধ জনতা। আধ ঘণ্টার জন্য পটনা-গয়া সড়কও অবরোধ করা হয়।
জানা গিয়েছে, সদর ব্লকের গৌরাপুর গ্রামের বাসিন্দা রাকেশ কুমারের স্ত্রী খুশবু কুমারী প্রসবের জন্য ২৫ জুলাই সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। সার্জন ডাঃ অশোক কুমার তাঁর সিজারিয়ান ডেলিভারি করিয়েছিলেন। কিন্তু অস্ত্রোপচারের সময় চিকিৎসক ভুলবশত ওই মহিলার পেটের মধ্যেই কাপড় রেখে দেন।
সন্তান নিয়ে বাড়ি ফেরার পরও প্রসূতি বিগত ১০ দিন ধরে পেট ফাঁপা ও ব্যথায় ভুগছিলেন। তাঁকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে, চিকিৎসকরা কিছু অ্যান্টিবায়োটিক দেন। কিন্তু কোনও ওষুধই কাজ করেনি। এরপর শুক্রবার ওই মহিলার পরিবার তাঁকে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যান।
সেখানে চিকিৎসক আল্ট্রাসাউন্ড ও সিটি স্ক্যান করালে দেখা যায়, ওই মহিলার পেটে ‘ফরেন পার্টিকেল’ রয়েছে। সেই কারণেই পেট ব্যথা ও পেট ফুলে যাচ্ছিল ওই মহিলার। বিষয়টি জানতে পেরেই ওই মহিলার স্বামী ও পরিবারের অন্য সদস্যরা সদর হাসপাতালে ছোটেন। সেখানে চিকিৎসককে চেপে ধরেন। ওই চিকিৎসক দোষ স্বীকার না করলেও, পুনরায় পরীক্ষা এবং প্রয়োজনে অস্ত্রোপচার করার কথা বলেন। কিন্তু রোগীর পরিবার আর সরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করাতে রাজি হয়নি।
শনিবার বেসরকারি হাসপাতালে ওই মহিলার অস্ত্রোপচার করানো হয়। পেট থেকে একটি কাপড় বের করা হয়। এরপরই ক্ষুব্ধ পরিবার ও এলাকার লোকজন সদর হাসপাতালে গিয়ে অশান্তি-শোরগোল সৃষ্টি করে। সড়ক অবরোধ করে হাসপাতাল প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।