নয়া দিল্লি : আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা পুনরায় স্বাভাবিক করার চিন্তা ভাবনা করছে কেন্দ্র। কিন্তু এরই মধ্যে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন দাঁত-নখ বের করতে শুরু করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকা, বৎসোয়ানা সহ এখনও পর্যন্ত ১২ টি দেশে এই ভ্যারিয়েন্টের হদিশ মিলেছে। এরই মধ্যে পরিস্থিতির উপর সজাগ নজর রাখছে বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক।
আজ রাজ্যসভায় বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকেই বিষয়টির উপর সর্বক্ষণ নজর রাখা হচ্ছে।
বিভিন্ন দেশগুলির সঙ্গে ভারতের বর্তমান ‘এয়ার বাবল’ বা দ্বিপাক্ষিক বিমান পরিষেবা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করার বিষয়ে আম আদমি পার্টির সাংসদ সুশীল গুপ্তার প্রশ্নের উত্তরে সিন্ধিয়া রাজ্যসভায় জানান, কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি ১৫ ডিসেম্বর থেকে ভারতে আসা এবং ভারত থেকে যাওয়ার বাণিজ্যিক আন্তর্জাতিক যাত্রী বিমান পরিষেবা পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন কভারেজ এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য প্রোটোকলের উপর নজর রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টকে উদ্বেগজনক হিসাবে চিহ্নিত করার সঙ্গে সঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ করছে। সিন্ধিয়া বলেন, “উদ্বেগজনক নতুন ভ্যারিয়েন্টের প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান বিশ্ব পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, এই বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে অন্যান্য মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। পরিস্থিতির উপর সর্বক্ষণ নজর রাখা হচ্ছে এবং তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।”
বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী জেনারেল ভি কে সিং বলেন, “এক সপ্তাহ আগে আপনারা সবাই বলছিলেন যে আমরা দেরি করছি। কেন আমরা বিমান রুট চালু করছি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। এখন যখন আমরা খোলার কথা বলছি, সবাই হঠাৎ করে বলছে এটি একটি তাড়াহুড়োয় নেওয়া সিদ্ধান্ত। এটি কোনও তাড়াহুড়ো নয় বরং একটি সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত। প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেছেন যে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সে কারণে প্রোটোকল শিথিল করা হয়নি।”
দেশে ওমিক্রন ভ্য়ারিয়েন্টের প্রবেশ রুখতে এ দিন কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, বিদেশ থেকে আগত প্রত্যেক যাত্রীকেই আরটি-পিসিআর পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট জমা দিতে হবে। একইসঙ্গে একটি স্ব-ঘোষণা পত্র (self-declaration form) পূরণ করতে হবে। যদি এই দুটি শর্ত পূরণ না করেন, তবে বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের বিমানবন্দরেই আটকে দেওয়া হবে, দেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, “ঝুঁকিপূর্ণ দেশ” (High Risk Countries) অর্থাৎ দক্ষিণ আফ্রিকা, ইজরায়েল, হংকং সহ যে দেশগুলিতে ইতিমধ্যেই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গিয়েছে, সেই সমস্ত দেশগুলি থেকে যাত্রীরা এলে তাদের ভারতে পৌঁছনোর পরও ফের আরটি-পিসিআর পরীক্ষা (RT-PCR Test) করাতে হবে। যদি কারোর রিপোর্ট পজেটিভ আসে, তবে তাদের একান্তবাসে পাঠানো হবে এবং নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য় পাঠানো হবে। যদি কোনও ব্যক্তির জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের রিপোর্টে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়ে, তবে আরও কঠোর নিয়ম জারি করা হবে।