ইন্দোর: এমনটাও হয়! নাবালিকাদের বয়স ৪ বছর থেকে ১৪ বছর। পান থেকে চুন খসলেই তাদের হাত-পা বেঁধে মাথা নীচু করে উল্টে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। গরম রড দিয়ে ছ্যাঁকাও দেওয়া হয়। এমনকি বাথরুমে বন্ধ করে রেখে শাস্তি পর্যন্ত দেওয়া হয়। শিশুদের উপর এমনই অত্যাচারের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে মধ্য প্রদেশের রাজধানী ইন্দোরের একটি অনাথ আশ্রমে। ওই আশ্রমের কর্মীরাই শিশুদের এমন নৃশংস শাস্তি দেয় বলে অভিযোগ। গোটা ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ-প্রশাসন থেকে মধ্য প্রদেশের শিশু কল্যাণ কমিটি (CWC)।
পুলিশ জানায়, ইন্দোরের অনাথ আশ্রমটি বাতসালিয়াপুরম জৈন ট্রাস্টের দ্বারা পরিচালিত। এই ট্রাস্টের আশ্রম বেঙ্গালুরু, সুরাট, যোধপুর ও কলকাতাতেও শাখা রয়েছে। ইন্দোরের এই আশ্রমটিতে ২১ জন নাবালিকা ছিল। তাদের সামান্য ভুলেই আশ্রমের কর্মীরা অকথ্য অত্যাচার করে বলে অভিযোগ। শিশুরা জানিয়েছে, তাদের উল্টে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়, গরম রডের ছ্যাঁকা দেওয়া হয় এবং হাত-পা বেঁধে ছবিও তোলা হয়। এমনকি তাদের অতিরিক্ত ঝাল খাবার খাওয়ানো হয় বলেও শিশুরা জানিয়েছে। তাদের বয়ানের ভিত্তিতে ওই অনাথ আশ্রমের ৫ কর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। CWC চেয়ারম্যান পল্লবী পোরওয়ালও বিজয় নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশের অভিযোগপত্রে রয়েছে, ৪ বছরের এক শিশুকে দু-তিনদিন বাথরুমে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল এবং খেতেও দেওয়া হয়নি। অত্যাচারের জেরে শিশুদের দেহে দাগ এখনও রয়েছে। প্রমাণ হিসাবে সেই ছবি তোলা হয়েছে বলেও পুলিশ জানিয়েছে।
তদন্তে নেমে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, আশ্রমটির একটি হলঘরে ২১ নাবালিকা একসঙ্গে রাখা হত। শুধু পোশাক বদলের জন্য আলাদা একটি ঘর ছিল। ওই হল ঘরেই তারা পড়াশোনা করত, খাবার খেত এবং ঘুমাত। শোয়ার জন্য মেঝেতে কেবল একটি গদি পাতা ছিল।
শিশুদের উপর অত্যাচারের যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে সেটা ভয়ঙ্কর এবং তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইন্দোরের এসিপি অমরেন্দ্র সিং। তিনি জানান, শিশুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগটি প্রকাশ্যে আসার পরই অনাথ আশ্রমটি সিল করে দেওয়া হয়েছে এবং ২১ শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং সরকারি সুবিধাপ্রাপ্ত অন্য হোমে স্থানান্তর করা হয়েছে।