গুয়াহাটি: সীমানা ঘিরে দ্বন্দ্ব লেগেই রয়েছে দুই রাজ্যের মধ্যে। এ বার অসম পুলিশের বিরুদ্ধে এক ঠিকাকর্মীকে হেনস্থা ও অপহরণের অভিযোগ আনল মিজোরাম। জুলাই মাস থেকেই দুই রাজ্য়ের মধ্য়ে সীমানা নিয়ে নতুন করে যে বিরোধ শুরু হয়েছে, তা ফের নতুন মোড় নিল।
মিজোরামের কোলাসিবের ডেপুটি কমিশনার এইচ লালথাঙ্গলিয়ানা বৃহস্পতিবারই অসমের হাইলাকান্ডির কমিশনারকে চিঠি লিখে অপহরণের অভিযোগ জানান। চিঠিতে দাবি করা হয়, লালনারামমাউয়া নামক এক মিজোেরামের বাসিন্দাকে অসম পুলিশ বন্দুক দেখিয়ে, চোখ বেধে অপহরণ করেছে। মিজোরামের ভাইরেংতে গ্রাম থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আইতলাং এলাকা থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে একদল ঠিকে শ্রমিক ওই অঞ্চলে রাস্তা তৈরির কাজ করছিলেন, সেই সময়ই আচমকা চড়াও হয় অসম পুলিশ। তারা কাজ থামানোর নির্দেশ দেন এবং মাটি খোঁড়ার মেশিনও ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে। জেসিবি চালকের কাছ থেকে জোর করে মেশিনের চাবি কেড়ে নেওয়া হয় ও তাঁর দিকে বন্দুক তাক করা হয়। এই ফাঁকেই আরেক পুলিশকর্মী ওই শ্রমিকের চোখ বেঁধে দেন এবং তাঁকে টেনে হিচড়ে নদীর দিকে নিয়ে যায়। ওই জেসিবি মেশিনটিও অসম পুলিশ নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ।
অসম পুলিশের ওই কর্মীরা কম্য়ান্ডো ইউনিফর্ম পরেছিল বলে জানানো হয়েছে ওই চিঠিতে। ওই শ্রমিকের এখনও খোঁজ মেলেনি বলেও জানানো হয়েছে, কেড়ে নেওয়া হয়েছে তাঁর মোবাইল ফোনও। এই ঘটনাকে অত্যন্ত গম্ভীর বলে আখ্যা দিয়ে মিজেরাম পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এই ধরনের ঘটনা আগামিদিনে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তুলবে। সম্প্রতিই দুই রাজ্যের সীমানায় শান্তি বজায় রাখার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাও প্রভাবিত হবে।
ইতিমধ্যেই সীমানায় ফের দুই রাজ্যের তরফেই ফের পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোলাসিবের ডিজি অসম প্রশাসনকে অনুরোধ করেছেন যে এই বিষয়ে যেন হস্তক্ষেপ করা হয় এবং অপহরণের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
স্বাধীনতার সময়কাল থেকেই অসম ও মিজোরামের মধ্যে রাজ্যের সীমানা নিয়ে বিরোেধ রয়েছে। গত ২৫ জুলাই রাতে মিজোরামের আইতলাঙে প্রবেশ করে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার পরই পরদিন অর্থাৎ ২৬ জুলাই দুই রাজ্যের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। দুউই পক্ষের মধ্যে গুলি চালনার ঘটনায় অসমের ৬ জন পুলিশকর্মী ও এক স্থানীয় বাসিন্দার মৃত্যু হয়, আহত হন ৫০ জনেরও বেশি।
এরপরই দুই সরকার টুইট করে পরস্পরকে দোষারোপ করতে থাকে। টুইটারেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এবং জোরামথাঙ্গা। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের হস্তক্ষেপে সীমানায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয় এবং দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন। আরও পড়ুন: সুরাপ্রেমীদের জন্য বিশেষ খবর! টিকা সার্টিফিকেট দেখালে তবেই মিলবে মদ, নয়া নির্দেশিকা দিল এই জেলা