নয়া দিল্লি: ক্ষমতার আসার পর থেকেই দুর্নীতি দূর করতে একের পর এক ব্যবস্থা নিয়েছে মোদী সরকার। তবে, তাতেও দুর্নীতি পুরোপুরি দূর হয়নি। এই দুর্নীতির অভিযোগ তুলেই বাংলায় ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার মতো একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থ প্রদান বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। এবার, দুর্নীতির গোড়ার আঘাত করতে আরও এক বড় পদক্ষেপ করতে চলেছে মোদী সরকার। সূত্রের খবর, আগামী বছরের শুরু থেকেই মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান গ্যারান্টি স্কিমের (MGNREGS), অর্থাৎ, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে কর্মীদের উপস্থিতি যাচাই করতে ‘ফেস রেকগনিশন’ প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হবে। অর্থাৎ, ক্যামেরার সামনে সুবিধাভোগীদের নিজেদের মুখ দেখিয়ে তাঁদের কাজে উপস্থিতির প্রমাণ দিতে হবে। ভুয়ো জবকার্ডধারীদের সরকারি সুবিধা পাওয়ার তালিকা থেকে দূর করে এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পে আর্থিক অনিয়ম কমিয়ে, এই প্রকল্পকে আরও স্বচ্ছ করার লক্ষ্য়েই এই পদক্ষেপ করতে চলেছে মোদী সরকার।
তবে প্রাথমিকভাবে, ফেস রেকগনিশনের মাধ্যমে কর্মীদের উপস্থিতির প্রমাণ দেওয়ার বিষয়টি ঐচ্ছিক রাখার পরিকল্পনা করছে পঞ্চায়েতি গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রকের পক্ষ থেকে দেশের সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সরকারকে এই নতুন ব্যবস্থাটি যাচাই করে, এর বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রকের দুই পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, মুখের প্রমাণীকরণের ফিচারটি ইতিমধ্যেই জাতীয় মোবাইল মনিটরিং সিস্টেম অ্যাপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গত মাসেই রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে এই নয়া ব্যবস্থার বিভিন্ন দিকগুলি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ওই কর্তারা বলেছেন, “এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে, পুরো ব্যবস্থায় আরও স্বচ্ছতা আসবে। শুধুমাত্র প্রকৃত কর্মীরাই কাজ করছেন, তা নিশ্চিত করা যাবে। পরিকল্পনাটি শীঘ্রই চালু করা হবে। তবে আপাতত এটি ঐচ্ছিক হিসেবে থাকে।”
জানা গিয়েছে, নতুন ফিচারে ১০০ দিনের কাজের কর্মীদের মুখ স্ক্যান করা হবে। প্রমাণীকরণের জন্য, তাদের আধার তথ্য যাচাই করে, ওই মুখের ছবি লিঙ্ক করা হবে। পরে, যখনই ওই সংশ্লিষ্ট কর্মী স্ক্যানের সামনে তাঁর নিজের মুখ ধরবেন, সিস্টেম সেটা তাঁর উপস্থিতির প্রমাণ হিসেবে ধরবে। বর্তমানে তেলঙ্গানা এবং কর্নাটকের মতো কিছু রাজ্যে, সেই সব রাজ্যের সরকার পেনশন প্রদান, কর্মীদের উপস্থিতি চিহ্নিত করা, চালকদের লাইসেন্স প্রদানের মতো কাজে ফেস রেকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে। কিছু কিছু বিমানবন্দরেও বায়োমেট্রিক এবং কন্ট্যাক্টলেস নিরাপত্তা ছাড়পত্র প্রদানের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তবে, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে দুর্বল ইন্টারনেট পরিষেবায়, ১০০ দিনের কাজের কর্মীদের জন্য এই ব্যবস্থা চালু করা হলে, তা কতটা কাজ করবে, এই নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।