নয়া দিল্লি : গত এক বছরে ভারতীয় নাগরিকত্ব ছেড়েছেন ১ লক্ষ ৬৩ হাজার মানুষ। ২০১৫ সালের পর এটাই সর্বোচ্চ। তার প্রায় অর্ধেক মানুষই আমেরিকার নাগরিকত্ব নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই তথ্য সংসদে প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতি বছরই বহু ভারতীয় দেশের পাসপোর্ট ছেড়ে দেন। পাসপোর্টের সেই তথ্য থেকেই বেরিয়ে আসে, ঠিক কতজন ছেড়েছেন নাগরিকত্ব। কেউ কর্মসংস্থানের জন্য, কেউ পড়াশোনার সুবিধার জন্য অন্য দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে থাকেন।
গত কয়েক বছরের হিসেব দেখলে দেখা যাবে, ২০১৯ ও ২০২০-র তুলনায় সেই সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে ২০২১-এ। ২০১৯-এ সংখ্যাটা ছিল ১ লক্ষ ৪৪ হাজার ১৭ জন ও ২০২০-তে সেই সংখ্যা ছিল ৮৫ হাজার ২৫৬ জন। এ দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এই পরিসংখ্যা তুলে ধরা হলেও নাগরিকত্ব ছাড়ার কারণ স্পষ্ট নয়। ব্যক্তিগত কারণেই তাঁরা দেশ ছেড়েছেন বলে দাবি কেন্দ্রের। ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী, একসঙ্গে দুই দেশের নাগরিকত্ব রাখা যায় না। তাই ভারতের পাসপোর্ট জমা দিয়ে তবেই অন্য দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে হয়।
বহুজন সমাজবাদী পার্টির সাংসদ হাজী ফজলুর রহমান এই বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। তাঁর প্রশ্নেরই উত্তর দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই। তিনি জানিয়েছেন, পরিসংখ্যান অনুযায়ী আমেরিকার পর ভারতীয়দের পছন্দের তালিকায় রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার, সেই দেশের নাগরিকত্ব নিয়েছেন ২৫ হাজার ৩৩৩ জন। এ ছাড়া কানাডার নাগরিকত্ব নিয়েছেন ২১ হাজার ৫৯৭ জন, ইউকে-তে গিয়েছেন ১৪ হাজার ৬৩৭ জন ও ইতালির নাগরিকত্ব নিয়েছেন ৫ হাজার ৯৮৭ জন। এ ছাড়াও নিউজিল্যান্ড ও সিঙ্গাপুর- দুই দেশের নাগরিকত্ব নিয়েছেন ২ হাজারের বেশি মানুষ।
এ ছাড়া পাকিস্তানে থাকেন এমন ৪১ জন ভারতীয় তাঁদের নাগরিকত্ব ছেড়েছেন গত বছর। ২০২০-তে এই সংখ্যাটা ছিল মাত্র ৭। অন্যদিকে বিদেশ মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে ২০২১-এর মধ্যে ১০ হাজার ৬৪৫ জন বিদেশি ভারতের নাগরিকত্ব নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। তার মধ্যে রয়েছেন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের বহু নাগরিক। ৪৫২ জন আবেদন করেছেন, যাঁদের কোনও দেশের নাগরিকত্ব ছিল না। বিদেশ মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাস করছেন ১ কোটি ৩৩ লক্ষ ৮৩ হাজার ৭১৮ জন।