নয়া দিল্লি: বেশিরভাগ বিবাহ বিচ্ছেদই ‘লাভ ম্যারেজ’ বা প্রেম করে বিয়ের ফল। মঙ্গলবার (১৭ মে), এমনই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। এদিন, বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি সঞ্জয় করোলের দুই বিচারপতির বেঞ্চ এক বৈবাহিক কলহের মামলার ট্রান্সফার পিটিশনের শুনানির সময় এই মন্তব্য করেন। আবেদনকারীদের আইনজীবী আদালতে জানিয়েছিলেন, এই দম্পতি প্রেম করে বিয়ে করেছিল। এরপরই বিচারপতি গাভাই মন্তব্য করেছেন, “মনে হচ্ছে, বেশিরভাগ বিবাহ বিচ্ছেদই প্রেমের বিবাহ থেকে উদ্ভূত হয়।” সূত্রের খবর, আদালত ওই দম্পতির মধ্যে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু, স্বামী সেই সমাধানের বিরোধিতা করেন। পরে আদালত জানায়, সাম্প্রতিক এক মামলার রায়ের প্রেক্ষিতে, আদালত চাইলে স্বামীর সম্মতি ছাড়াই বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন মঞ্জুর করতে পারে। তবে, শেষ পর্যন্ত বিচারপতিরা এই দম্পতিকে নিজেদের মধ্যে ঝামেলা মিটিয়ে নেওার নির্দেশ দেন।
চলতি মাসের শুরুতে, শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪২-এর ক ধারার অধীনে বিবাহের “অপূরণীয় ভাঙ্গনের” ভিত্তিতে শীর্ষ আদালত যে বিবাহবিচ্ছেদের মঞ্জুরি দেয়, তা কোনও “অধিকারের বিষয়” নয়। এটি একটি বিচক্ষণতা, যা অত্যন্ত যত্ন এবং সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করা উচিত। উভয় পক্ষই যাতে ‘সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার’ পায়, সেই বিষয়ে নিশ্চিত করতে হবে। বিচারপতি এস কে কওলের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ জানায়, এই ক্ষেত্রে বিবাহ যে সম্পূর্ণ অকার্যকর, সম্পর্কটি মনের দিক থেকে মরে গিয়েছে এবং এই সম্পর্ক আর মেরামত করা যাবে না, এই বিষয়ে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত হয়ে তবেই বিবাহ বিচ্ছেদে সম্মতি জানানো উচিত।
আদালত আরও বলেছিল যে, বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে বিবাহটি যে ভেঙে গিয়েছে, তা বাস্তবসম্মতভাবে এবং দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। এর জন্য, বেশ কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করতে হবে। বিয়ের পর সহবাসের সময়কাল, তারা শেষবার কখন যৌনমিলনে লিপ্ত হয়েছিল, এবং একে অপরের এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুই পক্ষের অভিযোগের প্রকৃতি কী – এই ধরনের বিষয়গুলি বিবেচনা করতে হবে। আদালত আরও জানিয়েছিল, হিন্দু বিবাহ আইনে বিচ্ছেদের জন্য যে ৬ মাসের বাধ্যতামূলক ‘ওয়েটিং পিরিয়ড’ লাগে, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪২ প্রয়োগ করে সেই সময় ছাড়াই বিবাহ ভেঙে দেওয়া যেতে পারে। তবে তা প্রযোজ্য হবে শুধুমাত্র পারস্পরিক সম্মতিতে বিবাহ-বিচ্ছেদের ক্ষেত্রেই।