নয়া দিল্লি : বিতর্ক শেষে এফসিআরএ (FCRA) লাইসেন্স ফিরে পেল মাদার টেরিজার সংস্থা মিশনারিজ অব চ্যারিটি (Missionaries Of Charitry)। মাদারের সংস্থার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে বিরোধীরা আঙুল তুলেছিলেন মোদী সরকারের দিকে। যদিও সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছিল কেন্দ্রের নির্দেশে অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়নি, তাঁদের লাইসেন্সের পুনর্নবীকরণ হয়নি বলেই এই বিভ্রান্তি। সেই বিতর্কের অবসান ঘটল অবশেষে। এফসিআরএ লাইসেন্স আবার ফিরে পেল সংস্থা। শনিবারই ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগুলেশন অ্য়াক্ট ওয়েবসাইটে মিশনারিজ অব চ্যারিটির নাম দেখা গিয়েছে।
সাধারণত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন এই বিষয়টি। কেন্দ্র বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও বিবৃতি না দিলেও
সংবাদসংস্থা এএনআই সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রয়োজনীয় নথি জমা দেওয়ার পরই লাইসেন্স ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই সংস্থাকে।
এফসিআরএ অর্থাৎ ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগুলেশন অ্য়াক্টের লাইসেন্স থাকলে তবেই কোনও সংস্থা বিদেশ থেকে অনুদান হিসেবে টাকা পেতে পারে। মাদারের এই সংস্থা মূলত সেবামূলক কাজের জন্যই তৈরি হয়েছিল, যার সদর দফতর কলকাতায়। এই সংস্থায় আশ্রয় পান বহু অনাথ, অন্যদিকে চিকিৎসা পান দরিদ্র মানুষ। স্বাভাবিকভাবেই লাইসেন্সের পুনর্নবীকরণ না হওয়ায় বিদশি অনুদান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সংস্থার। এর প্রভাবে সেবামূলক কাজ বাধাপ্রাপ্ত হয়।
সংস্থার তরফে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল, তাতে উল্লেখ করা হয়েছিল যে তাদের এফসিআরএ রেজিস্ট্রেশন বাতিল বা সাসপেন্ড করা হয়নি। কেন্দ্রের তরফে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার কোনও নির্দেশও দেওয়া হয়নি। তবে, তারা জানতে পারে যে এফসিআরএ রেজিস্ট্রেশনের পুনর্নবীকরণ হয়নি। তাই জটিলতা কমাতেই সংস্থার শাখাগুলিকে অ্যাকাউন্ট ব্যবহার না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছিল যে, ২০২১-এর ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ছিল ওই রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ ছিল। সেটা বর্ধিত করা হয় ৩১ ডিসেম্বর অবধি। পরে বেশ কিছু তথ্য সামনে আসে, যা কেন্দ্রের শর্তের পরিপন্থী। তাই, রেজিস্ট্রেশনের পুনর্নবীকরণ করা হয়নি।
বিতর্কের শুরু বিরোধীদের দাবিতে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন সহ অনেকেই অভিযোগ করেছিলেন, কেন্দ্রের তরফে সংস্থার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অনেক রাজনীতিক এই ঘটনার প্রতিবাদ জানান। যদিও কেন্দ্র সাফ জানিয়েছিল যে, অ্যাকাউন্ট বন্ধ হওয়ার ঘটনায় তাদের কোনও হাত নেই।
লাইসেন্স বিভ্রাটে যখন চ্যারিটি আর্থিক সমস্যায় ভুগছিল, তখন সাহায্য়ের হাত বাড়ান ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। তিনি ওড়িশায় থাকা চ্যারিটির সবকটি কেন্দ্রের জন্য ৭৮ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। অবশেষে সেই বিতর্ক মিটল। লাইসেন্স ফিরল সংস্থার।