নয়া দিল্লি : সাধারণত আর-নট ভ্যালু থেকে কোনও দেশের করোনা সংক্রমণের (Spread of COVID 19) পরিস্থিতি বোঝা যায়। চলতি সপ্তাহে ভারতের আর-নট ভ্যালুর (R-naught Value) সূচক ছিল ৪, যা থেকে ইঙ্গিত মেলে, খুব দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে আইআইটি মাদ্রাজের (IIT Madras) একটি বিশ্লেষণে পূর্বাভাস মিলছে, ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা শীর্ষে পৌঁছে যাবে।
কোনও দেশের আর-নট ভ্যালু থেকে বোঝা যায়, কোনও একজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি কতজন মানুষের শরীরে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। এই আর-নট ভ্যালু এক (১)-এর নিচে নেমে গেলে ধরে নেওয়া যেতে পারে, অতিমারি পরিস্থিতি কেটে গিয়েছে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আইআইটি মাদ্রাজের গবেষকরা কম্পিউটেশনাল মডেলিং পদ্ধতির মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, গত সপ্তাহে ( ২৫ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত) দেশের আর-নট ভ্যালু ছিল ২.৯। আর চলতি সপ্তাহে (১ জানুয়ারি থেকে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত) আর-নট ভ্যালু বেড়ে হয়েছে ৪।
এই বিষয়ে আইআইটি মাদ্রাজের গণিত বিভাগের প্রফেসর ডঃ জয়ন্ত ঝাঁ জানিয়েছেন, আর-নট ভ্যালু মূলত তিনটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। সংক্রমণের সম্ভাবনা, কতটা ছড়াচ্ছে সেই হার এবং কতটা সময়ের ব্যবধানে এই সংক্রমণ ঘটছে। বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ভারতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এ ক্ষেত্রে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কারণেই সংক্রমণ ক্রমে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে।
অধ্যাপক জয়ন্ত ঝাঁ আরও বলেন, “এই বিশ্লেষণমূলক গবেষণা থেকে আমরা আশা করছি, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংক্রমণের গ্রাফ শীর্ষে যেতে পারে। আমাদের বিশ্লেষণ থেকে এটিও বোঝা যাচ্ছে, পূর্ববর্তী ঢেউয়ের তুলনায়, এবারের ঢেউয়ে সংক্রমণের বৃদ্ধিতে গ্রাফ তীব্র হবে।”
তিনি আরও বলেন, এই ঢেউটি আগের ঢেউয়ের থেকে অনেকটাই আলাদা হবে। কারণ, দেশের টিকাকরণ প্রক্রিয়া এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাঁর কথায়, “এখানে সুবিধা হল, এই সময়ে জনসংখ্যার প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ টিকা পেয়েছেন।”
উল্লেখ্য, দেশের করোনা পরিস্থিতির বাড়বাড়ন্ত বর্তমানে লাগামছাড়া রূপ নিতে শুরু করেছে। ফের একবার এক লাখের উপর দৈনিক সংক্রমণ। তবে পরিস্থিতি নিয়ে অযথা আতঙ্কিত না হয়ে, মানুষকে সতর্ক থাকার বার্তা দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটা বাড়লেও এখনও পর্যন্ত হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা অনেকটাই কম। হাসপাতালগুলিতে যাঁরা ভর্তি হচ্ছেন, তাঁদের সেভাবে অক্সিজেন দেওয়ারও প্রয়োজন পড়ছে না। তবে এই দেখে করোনাকে হালকা ভাবে নিলে চলবে না। শারীরিক দূরত্ববিধি বজায় রাখা এবং মাস্ক পরার সঙ্গে নিবিড় টিকাকরণ – এই তিনটিকে হাতিয়ার করেই করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।