নয়া দিল্লি: পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীর উপস্থিতি নিয়ে বারবারই সরব হয়েছে বিজেপি। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে একাধিকবার কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীরা বাংলায় এসে অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়িত করার কথা বলেছেন। ক্ষমতায় এলে পশ্চিমবঙ্গের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত সিল করে দেওয়া হবে, এমন প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে বিজেপি। গত কয়েকদিন আগে তো বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, বাংলার ভোটার তালিকায় নাকি অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরাও জায়গা পেয়েছে। এবার সেই অনুপ্রবেশকারীদের নিয়েই প্রশ্ন উঠল রাজ্যসভায়।
বুধবার বিজেপি সাংসদ রাকেশ সিনহা এই বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যসভায়। তিনি জানতে চান, পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশকারীদের ছবিটা এখন ঠিক কিরকম? জানতে চান, ফেন্সিং বা কাঁটাতারের বেড়া লাগানোর জন্য রাজ্য সরকারের কাছ থেকে যে জমি অধিগ্রহণ করার কথা ছিল, তা কত দূর এগিয়েছে?
আরও পড়ুন: কৃষি আইন কার্যকর হওয়ার পরও চালু রয়েছে মান্ডি, এমএসপি ব্যবস্থা: প্রধানমন্ত্রী
কেন্দ্রের তরফে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই পরিসংখ্যান দিয়ে জানান যে, গত কয়েক বছরে অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা কমেছে। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে একাধিক মামলা ছিল, তাই বেশ কয়েক কিলোমিটার ফেন্সিং বা বেড়া দেওয়া সম্ভব হয়নি।” নিত্যানন্দ রাই আরও বলেন, “রাজ্যে প্রাচীর দেওয়ার জন্য জমি অধিগ্রহণের ৩৩ টি মামলা অমীমাংসিত রয়েছে। এ কারণে, রাজ্যের সীমান্তের বেড়া লাগানোর কাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।”
২০১৬ থেকে ২০১৯ -এর মধ্যে অবৈধ অনুপ্রবেশ কমেছে বলেও এদিন দাবি করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি জানান, অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআর ২৫৪৮ থেকে কমে ২১০৪ হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে এমন অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যাও তিন বছরে ১৮৭ জন কমেছে। মন্ত্রী তথ্য দিয়ে জানিয়েছেন, ২০১৯-এ ৫০০ টি মামলা হয়েছিল, ধরা পড়েছিল ১১০৯ জন। ২০২০-তে সেখানে ধরা হয়েছে ৯৫৫ জনকে। অর্থাৎ সেই সংখ্যাটাও কমেছে অনেকটাই।
পশ্চিমবঙ্গে ভারত-বাংলাদেশের ২২১৬ কিলোমিটারের সীমান্ত রয়েছে, তার মধ্যে ১৬৩৮ কিলোমিটারে ফেন্সিং দেওয়া হয়েছে, বাকিটা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তার জন্য ভৌগলিক অবস্থানকেও খানিকটা দায়ী করেছেন মন্ত্রী। ৩১৯ কিলোমিটার জুড়ে নদী থাকায় সেখানে পাঁচিল দেওয়ার কিছু সমস্যা রয়েছে বলে জানান তিনি।