নয়া দিল্লি: বঙ্গ রাজনীতিতে একদা চাণক্য হিসেবে পরিচিত ছিলেন না। একটা দীর্ঘ সময় তৃণমূলে (TMC) কাটানোর পর হঠাৎ করেই বিজেপিতে (BJP)। তারপর মাঝে হঠাৎ সক্রিয় রাজনীতিতে থেকে দূরে। আবার একদিন হঠাৎ করেই তৃণমূল ভবনে মমতা-অভিষেকের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। কথা হচ্ছে মুকুল রায়কে (Mukul Roy) নিয়ে। মুকুল-কেন্দ্রীয় যাবতীয় রাজনৈতিক ঝটকাগুলো এমন হঠাৎ করেই হয়ে গিয়েছে। তাঁকে নিয়ে বহু জল্পনা। দলবদলের গুঞ্জন। রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা… সবকিছুর সাক্ষী থেকেছে বাংলা। এমনকী বঙ্গ রাজনীতিতে মুকুলকে ‘লস্ট কেসও’ বলছেন অনেকে। কিন্তু তাঁকে নিয়ে চর্চা বন্ধ হয়নি। সম্প্রতি কাউকে না জানিয়ে মুকুলের আবার সেই হঠাৎ করেই দিল্লি চলে যাওয়া নিয়েও গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। এবার দিল্লি থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে সব ধোঁয়াশা কাটানোর চেষ্টা করলেন মুকুল রায়। নিজের রাজনৈতিক অবস্থানও স্পষ্ট করার চেষ্টা করলেন।
২০২১ সালের জুন মাস। হঠাৎ করেই এক তপ্ত দুপুরে তৃণমূল ভবনে গিয়ে হাজির হয়েছিলেন মুকুল রায়। সঙ্গে ছিলেন মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশুও। সেদিন তৃণমূল ভবনে উপস্থিত ছিলেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুব্রত বক্সির মতো বর্ষীয়ান নেতারাও। সেদিন সকলের সামনেই মুকুলের গলায় উত্তরীয় পরিয়ে দিয়েছিলেন অভিষেক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সেদিন বলেছিলেন, ঘরের ছেলে ঘরে ফিরল। মুকুলেরও বক্তব্য ছিল, বিজেপিতে থাকতে না পেরেই ফিরে এসেছেন। তারপর থেকেই তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। বিধানসভার অন্দরে খাতায় কলমে অবশ্য তিনি এখনও বিজেপির বিধায়ক। ২০২১ সালের ভোটে কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে বিজেপির টিকিটে জিতেছিলেন তিনি। কিন্তু বঙ্গ বিজেপির নেতারা সেদিনের পর থেকে আর মানতে চান না, তিনি পদ্ম শিবিরের সঙ্গে যুক্ত। মুকুলের রাজনৈতিক সখ্যতা বদলে গিয়েছে বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ তুলে আসছে বঙ্গ বিজেপির।
এবার সেই নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন মুকুল। ঠিক কী হয়েছিল তৃণমূল ভবনে? কেন তাঁকে দেখা গিয়েছিল সেখানে? রাজধানীতে বসে এক সাংবাদিক বৈঠকে মুকুল বললেন, ‘আমি (তৃণমূলে) যোগ দিইনি। ওদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছিলাম। আমাকে ওরা অফার করেছিল আসার জন্য। আমি কখনও কোনও দলে যোগও দিইনি। এক-দেড়দিন দেখা গিয়েছিল (তৃণমূল সখ্য প্রসঙ্গে)। কথা বলেছিলাম। এই অবধিই।’ মুকুলের হঠাৎ দিল্লিযাত্রাকে কেন্দ্র করে তাঁর আবার বিজেপিতে ফেরা নিয়েও একটি গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল। যদিও মুকুলের স্পষ্ট কথা, ‘ রিজয়েন বলে তো কোনও কথা হয় না। আমি বিজেপিতে ছিলাম, বিজেপিতে আছি। স্পিকারের কাছে সবাই আমাকে বিজেপিই বলে।’ রায়সাহেব এও জানিয়ে দিলেন, ‘আমি কোনও ধোকা দিইনি বিজেপিকে। তখন আমার শরীর ভাল ছিল না। তাই কিছুটা ধীরে চলছিলাম। আমি তো বিজেপিতেই ছিলাম, বিজেপিতেই আছি। দল কিছু কাজ দিলে, কাজ করব।’