মুম্বই : কয়েক দিন আগেই হাসপাতালের আইসিইউ-তে আগুন লেগে মৃত্যু হয়েছে ১১ জন করোনা আক্রান্তের। মহারাষ্ট্রের সেই মর্মান্তিক ঘটনার পরই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে ঘটনার সময় আইসিইউ-তে যে সব কর্মীদের থাকার কথা ছিল, তারা কেউই ছিলেন না। পুলিশ জানিয়েছে, ওই সময় সব কর্মীরা চা ও খাবার খেতে ব্য়স্ত ছিলেন।
আহমেদনগরের পুলিশ সুপার মনোজ পাটিল জানিয়েছেন, চার জন কর্মী সেই সময় হাসপাতালের আইসিইউ-র দায়িত্বে ছিলেন। তবে প্রত্যেকেই ওই সময় চায়ের দোকানে খেতে গিয়েছিলেন। কেউই উপস্থিত ছিলেন না। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপে জানিয়েছেন এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির নামে এফআইআর দায়ের হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, ‘হাসপাতাল কর্মীরা যদি সেই সময় সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসতেন, তাহলে হয়ত আরও কয়েকজন রোগীর প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হত।’ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪এ অর্থাৎ অবহেলার কারণে মৃত্যুর অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
আহমেদনগর পুরসভার দমকল বিভাগের আধিকারিক জানান, সম্প্রতি হাসপাতালে একটি অডিট করা হয়েছিল অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে এবং সেই সময়ে যাবতীয় ব্যবস্থা মজুত ছিল। আগুন লাগলে হাসপাতালের কর্মীরা দুটি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করে, কিন্তু ততক্ষণে আগুন এতটাই ছড়িয়ে পড়েছিল যে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
তিনি আরও জানান, আগুন ছড়িয়ে পড়তেই গোটা ওয়ার্ড কালো ধোঁয়ায় ভরে যায়। সেখানে শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল। ওই পরিস্থিতিতে আগুন নেভানো যথেষ্ট কষ্টকর ছিল। প্রায় দেড়-দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছিল যে শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে। পরে জানা যায়, অক্সিজেন সরবরাহ নিয়ন্ত্রণকারী একটি ইনভার্টার বা ভেন্টিলেটরের মনিটরে যান্ত্রিক ত্রুটি হয় এবং সেখান থেকেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এয়ার কন্ডিশনিং ব্যবস্থা থেকেও শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুন লাগার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে।
গত ৬ নভেম্বর সকাল ১১ টা নাগাদ আগুন লেগেছিল মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর জেলা হাসপাতালে। মোট ১৭ জন রোগী সেখানে ভর্তি ছিলেন। ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ১১ জন মারা যান। বাকি রোগীদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
আরও পড়ুন: Kunal Ghosh: ‘হুবহু একই ধারা’! কুণালের বিরুদ্ধে ত্রিপুরায় আরও ৪ টি মামলা