মুম্বই: শহরজুড়ে হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ(COVID-19), পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ওমিক্রন (Omicron) আক্রান্তের সংখ্যাও। শুরু হয়েছে লকডাউন (Lockdown) নিয়েও জল্পনা। এরই মাঝে মুম্বইয়ের মেয়র কিশোরী পেডনেকর (Kishori Pednekar) মঙ্গলবার জানান, করোনার সুনামির (COVID Tsunami) সঙ্গেও লড়তে প্রস্তুত মুম্বই। এদিনই তিনি বলেছিলেন, মুম্বইয়ে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজার পার করলেই লকডাউন ঘোষণা করা হবে।
এদিন একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে মুম্বইয়ের মেয়র কিশোরী পেডনেকর (Kishori Pednekar) বলেন, “এই মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের পর একটি নতুন ভ্যারিয়েন্ট উঠে এসেছে-ওমিক্রন। তবে আমাদের হাসপাতাল ও কোভিড কেন্দ্রগুলি প্রস্তুত রয়েছে। দ্রুতগতিতে টিকাকরণ কর্মসূচিও চলছে। কেন্দ্র ও রাজ্যের নির্দেশিকা মেনে চলা হচ্ছে। যাতে কোনও করোনাবিধি ভঙ্গ না করা হয়, তার জন্য কড়া নজরদারি রাখছে পুলিশবাহিনী।”
এক সপ্তাহ আগেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসিস বলেছিলেন যে ওমিক্রনের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে ব্যপকহারে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাবে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের থেকেও বেশি সংক্রামক হওয়ায়, করোনার সুনামি আসতো পারে বলে তিনি সতর্ক করেছিলেন তিনি।
মুম্বইয়ে আচমকা করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে, মেয়র বলেন, “আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা মেনে চলছি। আমরা জাম্বো কোয়ারেন্টাইন সেন্টার প্রস্তুত রেখেছি। করোনার যদি সুনামিও আসে, তবে মুম্বই ও মহারাষ্ট্র যথাসাধ্য চেষ্টা করবে সেই সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণ করার।”
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশজুড়ে চরম অক্সিজেন সঙ্কট ও হাসপাতালে শয্যার আকাল দেখা দিয়েছিল। সেই পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়েই রাজ্য এবার আরও ভাল প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানান মুম্বইয়ের মেয়র। তিনি বলেন, “গতবার কী কী খামতি থেকে গিয়েছিল, তা থেকে আমরা শিক্ষা নিয়েছি। হাসপাতাল ছাড়াও ৩০ হাজারেরও বেশি শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অক্সিজেন প্ল্যান্টও কাজ করছে। প্রয়োজনীয় জনবলও রয়েছে, আমরা তৃতীয় ঢেউয়ের সঙ্গে লড়তে প্রস্তুত।”
মুম্বইয়ে বর্তমানে সংক্রমণ প্রায় ৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলেই জানান এক স্বাস্থ্য় আধিকারিক। তবে অধিকাংশ আক্রান্তই উপসর্গহীন হওয়ায় উদ্বেগের বিশেষ কারণ নেই বলেই তিনি জানান। সোমবারই মুম্বইয়ে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৮২ জন, যা গত বছরের ১৮ এপ্রিলের পর সর্বোচ্চ সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় ২ জনের মৃত্যুও হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৪০ জন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত বলে জানা গিয়েছে।এই নিয়ে মুম্বইয়ে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬৮-তে বেড়ে দাঁড়াল।
মুম্বইয়ের মেয়র কিশোরী পেডনেকর জানান, এখনও লকডাউন নিয়ে চিন্তাভাবনা না করা হলেও, মুম্বইয়ে দৈনিক সংক্রমণ যদি ২০ হাজারের গণ্ডি পার করে, তবে লকডাউনের পথে হাঁটতে হবে। তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষ যদি থিয়েটার, বাগান বা মার্কেটের মতো জনবহুল জায়গায় নিয়ম ভেঙে ক্রমাগত ভিড় জমাতে থাকেন, তবে মুম্বইয়ে মিনি লকডাউনও জারি করা হতে পারে।”