নয়া দিল্লি: জাতিভিত্তিক জনগণনা নিয়ে সংসদে তাঁর বক্তৃতা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি একযোগে সমালোচনা করছে। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১ অগস্ট), বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর দাবি করলেন, তার মন্তব্যে কিছু কিছু লোকের অধিকারবোধে আঘাত লেগেছে। আর তাই এত হইচই হচ্ছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে তিনি বলেন, “আমার বিবৃতিতে কিছু লোকের অধিকারবোধে আঘাত লেগেছে। যার ফলস্বরূপ পুরো ইকোসিস্টেম হইচই করতে শুরু করেছে। তারা মনে করে, শুধুমাত্র তারাই প্রশ্ন করতে পারে। কারণ তারা বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত। তাদের পূর্বপুরুষরা অনগ্রসর শ্রেণির লোকদের ‘বুদ্ধু’। তাদের পূর্বপুরুষরা দলিত ও আদিবাসীদের সাম্য না দেওয়ার অজুহাত খুঁজতেন।”
এই বিতর্কের সূত্রপাত হয় মঙ্গলবার। লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী জাতি ভিত্তিক জনগণনার দাবি করেছিলেন। জবাবে, বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, রাহুল গান্ধীর জাত নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেছিলেন, “যার নিজেরই জাত জানা নেই, সে জাতিভিত্তিক আদমশুমারির কথা বলছে।” তাঁর এই মন্তব্য স্পষ্টতই বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকে নিশানা করে ছিল। অনুরাগ ঠাকুর ওই মন্তব্য করার পর, সমাজবাদী পার্টির সাংসদ অখিলেশ যাদব এবং ডিএমকে সাংসদ কানিমোঝি-সহ বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার বেশ কয়েকজন নেতা, অনুরাগ ঠাকুরকে আক্রমণ করেন। প্রশ্ন করেন, লোকসভার মধ্যে কেউ কীভাবে কারও জাত জিজ্ঞাসা করে?
তবে বুধবার অনুরাগের পাশে দাঁড়ান খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অনুরাগ ঠাকুরের বক্তৃতার ভিডিয়ো শেয়ার করে প্রধানমন্ত্রী তা সকলকে শোনার জন্য অনুরোধ করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের প্রেক্ষিতে, বুধবার প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে লোকসভায় একটি বিশেষাধিকার প্রস্তাব আনে কংগ্রেস। লোকসভার মহাসচিবের কাছে এই অভিযোগ জমা দেন কংগ্রেসের জলন্ধরের সাংসদ, চরণজিৎ সিং চান্নি। নোটিশে লেখা ছিল, “যে মন্তব্যগুলিকে লোকসভার কার্যধারা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী সেগুলিই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। স্পষ্টতই এটা বিশেষাধিকার লঙ্ঘন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।”
এদিকে, বহুজন সমাজ পার্টির সভাপতি মায়াবতী বলেছেন, লোকসভায় জাতি নিয়ে মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিরোধী এবং সরকার পক্ষের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব চলছে, তা শুধুই “নাটক”। ওবিসি সম্প্রদায়ের সঙ্গে প্রতারণা করার চেষ্টা করছে তারা। মায়াবতী বলেছেন, বিজেপি এবং কংগ্রেস দুই দলই ওবিসি-বিরোধী। তাই তাদের কাউকেই বিশ্বাস করা যায় না।