নয়া দিল্লি: ডিমাপুরে ভারতীয় সেনার ৩ কর্পসের এক বিশেষ দল ইতিমধ্যেই নাগাল্যান্ডের গুলি চালানোর ঘটনা কীভাবে ঘটল, তার অনুসন্ধান শুরু করেছে। অনুসন্ধানকারী দলের নেতৃত্বে রয়েছেন মেজর-জেনারেল পদের এক সেনা আধিকারিক। কীভাবে ১৪ গ্রামবাসী এবং এক জওয়ান সহ অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হল, তা খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, অভিযান চলাকালীন ব্যারেলের মতো দেখতে একটি জিনিস দেখতে পাওয়া যায়। আর তার থেকেই সন্দেহ গিয়েছিল কয়লা খনির ওই আট শ্রমিকের উপর। জওয়ানরা সন্দেহ করেছিলেন, ওই আট ব্যক্তি জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। তাহলে কি এই বিভ্রান্তির জেরেই এত বড় এক দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে গেল? ওয়াকিবহাল সূত্র মারফত অন্তত এমনটাই জানা গিয়েছে।
নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী এর আগে অবশ্য জানিয়েছিল, তারা একটি গোয়েন্দা রিপোর্ট পেয়েছিলেন, যেখানে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল ওই এলাকা দিয়ে এনএসসিএন (কে) ক্যাডাররা যাবে। অভিযানে জওয়ানদের গুলিতে ঘটনাস্থলেই ছয়জন কয়লা খনি শ্রমিক নিহত হন। বাকি দু’জন জখম ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
ছয়জন নিরপরাধ স্থানীয় বাসিন্দার মৃত্যুতে গ্রামবাসীদের মধ্যেই উত্তেজনা ছড়ায় এবং ক্রমেই তা এক হিংসাত্মক প্রতিশোধের রূপ নিতে শুরু করে, তাতে আরও মানুষ প্রাণ হারান। সোমবার সকাল পর্যন্ত, কমপক্ষে ১৪ জন সাধারণ নাগরিক এবং একজন জওয়ান প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, তদন্তকারী দল গুলি চালানোর ঘটনাক্রমটি খুঁজে বের করবে।
ওই সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে, এনএসসিএন (কে-ওয়াইএন) ক্যাডারদের গতিবিধি সম্পর্কে নির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের উপর ভিত্তি করেই অভিযানের জন্য অসম থেকে প্যারা স্পেশাল ফোর্সকে আনা হয়েছিল। অভিযানের সময়, সন্দেহভাজনদের গাড়িতে ওঠার আগে তাদের উপর নজরদারি করার সময় ব্যারেলের মতো দেখতে একটি জিনিস চোখে পড়ে। সূত্রের খবর, এটি সম্ভবত শিকারের জন্য ব্যবহারের একটি রাইফেল যা সাধারণত এখানকার গ্রামবাসীরা ব্যবহার করে থাকেন।
নাগাল্যান্ডে গ্রামবাসীদের মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই এফআইআর দায়ের হয়েছে আধা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে। সাধারণ নাগরিকদের খুন করাই বাহিনীর উদ্দেশ্য ছিল বলে অভিযোগ এনেছে নাগাল্যান্ড পুলিশ। পুলিশকে না জানিয়ে কেন অভিযান চালানো হল, সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে ওই এফআইআরে।
এফআইআরে রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সময় কোনও পুলিশ উপস্থিত ছিল না। কোনও পুলিশের উপস্থিতির জন্য কোনও থানায় আবেদনও জানায়নি আধা সামরিক বাহিনী। তাই এটা স্পষ্ট যে সাধারণ মানুষকে হত্যা করাই বা আক্রমণ করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য।
গতকালই অবশ্য এই ইস্যুতে বিবৃতি প্রকাশ করেছিল সেনাবাহিনী। এই ঘটনার পর সেনাবাহিনী তরফে দেওয়া বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘গোয়েন্দাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই অনুপ্রবেশ রুখতে মন জেলার তিরু এলাকায় অভিযানের পরিকল্পনা করেছিল সেনা।’ আরও বলা হয়েছে, ‘ঘটনায় আহত হয়েছেন একাধিক জওয়ান। এক জওয়ানের মৃত্যুও হয়েছে।’
আরও পড়ুন : Nagaland Firing: আধা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে FIR, ‘খুনের উদ্দেশ্যেই গুলি’, বলছে পুলিশ