নাগপুর: বান্ধবীকে নিয়ে হোটেলের ঘরে গিয়েছিলেন ৪১-এর যুবক। মদ্যপান করছিলেন। সেই সঙ্গে উপভোগের মাত্রা বাড়াতে দুটি ৫০ মিলিগ্রামের ভায়াগ্রা ট্যাবলেট গ্রহণ করেছিলেন ওই ব্যক্তি। লিঙ্গোত্থানের সমস্যা দূর করতে চিকিৎসকরা ভায়াগ্রা ট্যাবলেট দিয়ে থাকেন। রাতটা ভালই কেটেছিল। কিন্তু, পরের দিন সকাল হতেই শরীরে অস্বস্তি বোধ করতে শুরু করেছিলেন ওই ব্যক্তি। তাঁর বান্ধবী চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে বলেছিলেন। কিন্তু, তিনি পাত্তা দেননি। দেবেনই বা কেন? কোনওদিন তো তাঁর কোনও অসুস্থতা ছিল না। কিন্তু এরপর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। চিকিৎসকরা জানান, আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বিরল এই ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের নাগপুরে।
সম্প্রতি, জার্নাল অব ফরেন্সিক অ্যান্ড লিগ্যাল মেডিসিনে, এই বিষয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় জানা গিয়েছে, ‘সেরিব্রোভাসকুলার হেমারেজে’র কারণে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে তাঁর মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ কমে গিয়েছিল। সেই কারণেই তিনি অস্বস্তি বোধ করছিলেন এবং ক্রমে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই ব্যক্তি তাঁর বান্ধবীকে জানিয়েছিলেন এই রকম অস্বস্তি তাঁর আগেও হয়েছিল। ময়নাতদন্তের সময় ডাক্তাররা তাঁর মস্তিষ্কে ৩০০ গ্রাম ওজনের জমাট রক্তের দলা পেয়েছেন। তাঁদের মতে, অ্যালকোহলের সঙ্গে সিলডেনাফিল (ভায়াগ্রা নামে বেশি পরিচিত) ওষুধের মিশ্রণে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই ব্যক্তি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছিলেন বলেও জানা গিয়েছে। এই তিন বিষয়ই তাঁর মৃত্যুর কারণ।
বর্তমানে, জীবনযাত্রা, মানসিক চাপ ইত্য়াদি বিভিন্ন কারণে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গোত্থানের সমস্যায় ভোগেন বহু পুরুষ। এই সমস্যা দূর করতেই ভায়াগ্রা জাতীয় ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু, অনেকেই শুধুমাত্র বাড়তি উপভোগের আশায় চিকিৎসকদের পরামর্শ ছাড়াই এই ধরণের ওষুধ গ্রহণ করে থাকেন। ঠিক কত ডোজের ওষুধ নেওয়া নিরাপদ, তা না জেনেই ওষুধটি খেয়ে নেন। জার্নাল অব ফরেন্সিক অ্যান্ড লিগ্যাল মেডিসিনের নিবন্ধটির লেখকরা জানিয়েছেন, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এই ধরনের ওষুধ খেলে কী হতে পারে, কী কী ঝুঁকি থাকে, এই সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই তাঁরা এই বিরল কেসটি প্রকাশ করেছেন।