নয়াদিল্লি: বিলকিস বানো (Bilkis Bano) গণধর্ষণ কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হয় ১১ জন। তাদের সাজার মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই মুক্তি দিয়েছিল গুজরাট সরকার। তারই পাল্টা সুপ্রিম কোর্টে যান বিলকিস। সোমবারই এই ঘটনায় কেন্দ্র ও গুজরাট সরকারের কাছে জবাব তলব করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এ সংক্রান্ত সমস্ত নথি জমা দিতে বলা হয়েছে আদালতে। বিচারপতি কেএম জোসেফ ও বিচারপতি বিভি নাগরত্নের বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়। এদিন বিচারপতিদ্বয়ের বেঞ্চ বিলকিস বানোর সঙ্গে ঘটা ঘটনাকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেন। এরপরই নোটিস পাঠিয়ে বলা হয়, দোষীদের মুক্তির অনুমতি সংক্রান্ত যেন তৈরি রাখা হয়। আগামী ১৮ এপ্রিল ফের এই মামলার শুনানি হবে।
বিলকিস বানো আদালতকে জানান, দোষীদের সময়ের আগে মুক্তি শুধু বিলকিসের জন্যই নয়, তাঁর মেয়ে, পরিবার, গোটা সমাজের জন্য একটা বড়সড় ধাক্কা। ১১ জন মুক্তি পেয়ে যাওয়ার পর ঘটনাটি সামনে আসে। সেদিন গলায় মালা পরিয়ে, মিষ্টিমুখ করিয়ে ফেরানো হয়েছিল দোষীদের। শীর্ষ আদালতের এই ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, আবেগ নয়, আইনের হাত ধরেই এগোবে মামলা।
২০০২ সালের ঘটনা। গুজরাট হিংসার সময় ২১ বছর বয়সী তরুণী বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ করা হয়। সে সময় অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বিলকিস। শুধু বিলকিসই নয়, তাঁর মা এবং পরিবারের আরও তিন মহিলা গণধর্ষণের শিকার হন। সিবিআই এই ঘটনার তদন্ত করেছিল। ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি মুম্বইয়ে এক বিশেষ সিবিআই আদালত অভিযুক্ত ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। পরে বম্বে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই আদালতের রায় বহাল রাখে।
১৫ বছরের বেশি কারাবাসের পর আসামীদের মধ্যে একজন সুপ্রিম কোর্টে মুক্তির আবেদন করে। শীর্ষ আদালত গুজরাট সরকারকে বিষয়টি দেখার কথা বলে। গুজরাট সরকার এই ঘটনায় একটি কমিটি গড়ে। সেখানেই ১১ জনের আগাম মুক্তির সুপারিশ উঠে আসে। ১৫ অগস্ট গোধরা সাবজেল থেকে ছাড়া পায় ১১ জন। দেশজুড়ে এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। নতুন করে লড়াই শুরু করেন বিলকিস। সুপ্রিম কোর্টে যান তিনি। নতুন করে ফের নাড়াচাড়া পড়তে চলেছে বিলকিস বানো গণধর্ষণকাণ্ডে ১১ দোষীর সময়ের আগের মুক্তির ফাইলে।