অমৃতসর : চূড়ান্ত অপমানিত বোধ করেছিলেন। আর সেই কারণেই আজ বাধ্য হয়ে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং (Amarinder Singh)। আর সেই অপমানিত হওয়ার মূলে যে নভজ্যোৎ সিং সিধু (Navjot Singh Sidhu), তাও হাবে ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। কংগ্রেসের অন্দরে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, যে ৫০ জন বিধায়ক, অমরিন্দরের বিরুদ্ধে নালিশ করেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই সিধু ঘনিষ্ঠ।
বাধ্য হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়েছেন বটে, কিন্তু নিজের ক্ষোভ উগরে দিতে বেশি দেরি করলেন না পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। নভজ্যোৎ সিং সিধুর বিরুদ্ধে জমে থাকা একরাশ রাগ এবার প্রকাশ করেই ফেললেন তিনি। বললেন, নভজ্যোৎ সিং সিধু একেবারে অযোগ্য একজন মানুষ। তিনি আগামী দিনে কংগ্রেসের জন্য একটি বিপর্যয়ের কারণ হতে চলেছেন।” পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ক্যাপ্টেন যে কখনোই সিধুর নাম নেবেন না, তাও স্পষ্ট করে দিলেন তিনি। জানিয়ে রাখলেন, “পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর জন্য আমি তাঁর নামের বিরোধিতা করব।”
আর এরপরেই সিধুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তোলেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। অভিযোগ, পাকিস্তানের সঙ্গে নাকি সিধুর যোগাযোগ রয়েছে। আর তাই সিধুকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলে, তা জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করা হবে বলেই মনে করছেন তিনি।
পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “সিধুর সঙ্গে পাকিস্তানের সেনা প্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। এছাড়া পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী ইমরান খানও তাঁর বন্ধু। সিধুকে যদি পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়ার কথা হয়, তাহলে আমি তার বিরোধিতা করব।” তিনি আরও বলেন, আমার দেশকে বাঁচাতে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নভজ্যোৎ সিং সিধুর নামের বিরোধিতা করব। এটি দেশের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়।”
নভজ্যোৎ সিং সিধুর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ার মাশুল যে এমনটা হতে পারে, তা হয়ত অমরিন্দর সিংয়ের (Amarinder Singh) বুঝতে কিছুটা দেরি হয়ে গিয়েছিল। আর সেই ধাক্কাটাই আজ খেলেন। খোয়াতে হয়েছে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর পদ। পঞ্জাব কংগ্রেসের অন্তর্কলহ এবং দলের অভ্যন্তরে কঙ্কালসার ছবিটা আজ অনেকটাই স্পষ্ট।
পঞ্জাব কংগ্রেসের অন্দরমহলে কান পাতলেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রদেশ সভাপতির মধ্যে বিভাজনের স্পষ্ট ছবি বোঝা যায়। সম্প্রতি কংগ্রেস হাই কমান্ডের থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে অমরিন্দরের নেতৃত্বেই ময়দানে নামবে পঞ্জাব কংগ্রেস। আর এই সিদ্ধান্ত মোটেই ভাল চোখে দেখছেন না নভজ্যোৎ সিং সিধুর ঘনিষ্ঠরা।
পঞ্জাব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পরগত সিং তো রবিবার সরাসরি হরিশ রাওয়াতকে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন করেছেন। সিধু ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত পরগত সিং অমরিন্দর সিংয়ের নেতৃত্বে আসন্ন ভোটে লড়ার সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন । এখন আরও ৫০ জন বিধায়ক অমরিন্দরের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে কি অমরিন্দরের নেতৃত্বেই নির্বাচনে লড়াইয়ে নামবে কংগ্রেস? নাকি ভোট প্রচারে দেখা যেতে পারে অন্য কোনও মুখ?
আরও পড়ুন : AAP on Congress : ‘গেম অব থ্রোনস’ চলছে, টাইটানিকের মতো ডুববে পঞ্জাব কংগ্রেস