চণ্ডীগঢ়: চাপে পড়ে পদত্যাগ করেছেন তাঁর মুখ্য পরামর্শদাতা। দলের এই সিদ্ধান্তে একটুও খুশি নন, তা ভালভাবেই বুঝিয়ে দিলেন কংগ্রেস নেতা নভজ্যোত সিং সিধু (Navjot Singh Sidhu)। তিনি বলেন, “সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতাটুকুও যদি তাঁকে না দেওয়া হয়, তবে দলের জন্য অত্যন্ত খারাপ ফল হবে।”
প্রাক্তন ক্রিকেটার নভজ্যোত সিং সিধু বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদানের পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং (Amarinder Singh)-র সঙ্গে একাধিকবার বাদানুবাদে জড়িয়েছেন। পঞ্জাব কংগ্রেসের দায়িত্ব সিধুর হাতে তুলে দেওয়া ঘিরেও দীর্ঘদিন টানাপোড়েন চলে দলের অন্দরে। সম্প্রতিই সিধুর পরামর্শদাতা মালবিন্দর সিং মালির একটি টুইট ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়। কাশ্মীর একটি পৃথক দেশ বলাকে কেন্দ্র করেই বিরোধীদের পাশাপাশি কংগ্রেসের তরফেও সমালোচনা করা হয়।
মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, “সংবেদনশীল বিষয়গুলি নিয়ে এমন কোনও মন্তব্য করা ঠিক নয় যা ভাবাবেগকে আঘাত করতে পারে। যে বিষয়ে জ্ঞান কম কিংবা জ্ঞান নেই কিংবা তার অন্তর্নিহিত অর্থ সম্পর্কে কোনও বোধ নেই, সেই সমস্ত বিষয়ে মুখ না খোলাই ভাল।”
অমরিন্দরের এই মন্তব্যের পরই সিধু ঘনিষ্ট নেতারা মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে তাঁকে সরানোর দাবি জানালেও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতত্বের তরফে সাফ জানানো হয়, মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংই থাকবেন। তাঁর নেতৃত্বেই আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনও লড়বে কংগ্রেস। এ দিকে, দলের তরফে চাপ সৃষ্টি হওয়ার পরই শুক্রবার সিধুর পরামর্শদাতার পদ থেকে ইস্তফা দেন মালবিন্দর সিং মালি। ব্যস, এতেই যেন আগুনে ঘৃতাহুতি হয়।
শুক্রবারই নভজ্যোত সিং সিধু বলেন, “আমি বরাবরই সবার জীবন পরিবর্তন করার উদ্দেশ্যে কাজ করেছি। পঞ্জাবের উন্নয়নের লক্ষ্যেও কাজ করছি আমি। কিন্তু হাই কম্যান্ডকে আমি জানিয়েছি যে কখনওই কংগ্রেসকে নীচু হতে দেব না। আশেপাশের লোকজনেরা আমার থেকে যে আশা রাখেন, তা পূরণ করে আগামী ২০ বছরও আমরাই ক্ষমতায় থাকব। কিন্তু আমাকে যদি সিদ্ধান্তই নিতে না দেওয়া হয়, তা দলের জন্যই ক্ষতিকারক হবে। আমি শোপিস হয়ে থাকতে চাই না।”
এ দিকে, সিধুর মন্তব্য় নিয়ে মুখ খুলতে চাননি পঞ্জাব কংগ্রেসের ইন চার্জ হরিশ রাওয়াত। তিনি বলেন, “মিডিয়ায় কী নিয়ে কথা হচ্ছে, তার ভিত্তিতে আমি কিছু বলতে পারি না। উনি কোন প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন, তা দেখতে হবে। উনি দলের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন, উনি ছাড়া আর কে সিদ্ধান্ত নেবেন।”
রাওয়াত প্রসঙ্গ এড়াতে চাইলেও সিধুর মন্তব্য যে সরাসরি তাঁকে আক্রমণ করেই ছিল, তা সহজেই বোঝা যায়। বুধবারই তিনি বলেছিলেন, “পরামর্শদাতাদের দলের তরফে নিয়োগ করা হয় না। সিধুকে বলতে হবে ওনাকে (মালবিন্দর সিং মালি) পদ থেকে সরিয়ে দিতে। যদি সিধু না করে, তবে আমরাই করব। দলকে লজ্জিত করে, এমন কাউকে রাখা সম্ভব নয়।” আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনার অধীনে রাস্তা তৈরি করা ঘিরে বিবাদ, ফের উত্তপ্ত অসম-মিজোরাম সীমানা