মুম্বই : মানহানির মামলায় আরও কিছু নথি বম্বে হাই কোর্টে (Bombay High Court) জমা দিলেন এনসিবির জোনাল ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ের (Sameer Wankhede) আইনজীবী। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ম আড়াল করার অভিযোগ তুলেছিলেন এনসিপি (NCP) নেতা তথা মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক (Nawab Malik)। এরপরই নবাব মালিকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন সমীর ওয়াংখেড়ের বাবা। সেই মামলায় বৃহস্পতিবার আরও বেশ কিছু নথি জমা দেওয়া হয়েছে।
এ দিন নথিগুলি জমা দেন ওয়াংখেড়ের আইনজীবী অতুল দামলে ও কুনাল দামলে। এ দিন জমা দেওয়া হয়েছে বৃহন্মুম্বই পুর নিগমের একটি চিঠি, যেখানে ওয়াংখেড়ের বাবার নাম পরিবর্রতনের উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া সেন্ট জোসেফ স্কুল ও সেন্ট পল স্কুল থেকে সমীর ওয়াংখেড়ের স্কুল শেষ করার শংসাপত্র। পাশাপাশি আইনজীবী আরশাদ শেখ ও দিবাকর রাই জমা দিয়েছেন ওয়াংখেড়ের বাবা ধ্যানচাঁদ ওয়াংখেড়ের জাতি সংক্রান্ত শংসাপত্র। পুর নিগম থেকে পাওয়া সমীর ওয়াংখেড়ের জন্মের শংসাপত্রও জমা দেওয়া হয়েছে এ দিন।
এ দিন আদালতে অ্যাডভোকেট আরশাদ শেখ দাবি করেন দাউদ নামটা অনেক আগেই পাল্টে দেওয়া হয়েছে, তাই এই নামে আর ডাকা উচিৎ নয়। তিনি বিচারপতি জমাদারকে বলেন, ‘দাউদ ছাড়া অন্য যে কোনও নামে ডাকুন’। এ দিন আদালত সব নথি জমা নিয়েছে। আগামী ২২ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৫ টায় ওই মামলায় চূড়ান্ত রায় দেবেন বিচারপতি জমাদার।
মুম্বইয়ে প্রমোদতরী থেকে মাদক উদ্ধারের তদন্ত শুরু হওয়ার কিছুদিনের মধ্য়েই এনসিবির জ়োনাল অফিসার সমীর ওয়াংখেড়েকে আক্রমণ করেন এনসিপি নেতা নবাব মালিক। তিনি সমীর ওয়াংখেড়ের প্রথম স্ত্রীর কথা টেনে দাবি করেছিলেন যে, সমীর ওয়াংখেড়ে ভুয়ো জনজাতি সার্টিফিকেট দেখিয়ে সরকারি সুবিধা নিচ্ছেন। তিনি আদতে মুসলিম। এরপরই এ দিন মুম্বইয়ের ওয়াডালার সেন্ট জোসেফ হাই স্কুল এবং দাদরের সেন্ট পল হাই স্কুল থেকে সমীর ওয়াংখেড়ের সার্টিফিকেট বের করে পোস্ট করা হয়।
নবাব মালিকের দাবি ছিল, জন্মগতভাবে সমীর ওয়াংখেড়ে মুসলিম হলেও তিনি ভুয়ো হিন্দু জনজাতি শংসাপত্র ব্যবহার করে ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেছিলেন এবং সেখান থেকেই সরকারি চাকরি পেয়েছেন। এর আগে নবাব মালিক সমীর ওয়াংখেড়ের জন্ম শংসাপত্রও প্রকাশ্যে এনেছিলেন, যেখানে তাঁর নাম সমীর দাউদ ওয়াংখেড়ে হিসাবেই উল্লেখ করা ছিল।
ধর্ম ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধতেই সমীর ওয়াংখেড়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছিলেন, তাঁর বাবা হিন্দু হলেও তাঁর প্রয়াত মা মুসলিম ছিলেন। ধর্মীয় মিশ্রণের কারণেই একটি ধর্মনিরপেক্ষ পরিবারে বড় হওয়ায় ঐতিহ্য নিয়ে তিনি গর্বিত বলেও উল্লেখ করেছিলেন।
মাদক মামলার তদন্তে ধর্ম নিয়ে জলঘোলা কেন করা হচ্ছে, এই বিষয়ে এনসিপি নেতা তথা মহারাষ্টে্রের মন্ত্রী নবাব মালিককে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, “বিষয়টা সমীর ওয়াংখেড়ের ধর্ম নয়, তিনি কীভাবে ভুয়ো শংসাপত্র দেখিয়ে এনসিবি অফিসার হয়েছেন, সেই দুর্নীতি সকলের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে।”