কলকাতা ও আন্তাকিয়া: ভূমিকম্পে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তুরস্ক (Earthquake in Turkey) ও সিরিয়া। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে একের পর এক বহুতল। প্রাণ হারিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। এক লহমায় ভিটেমাটি ছাড়া হয়ে গিয়েছেন প্রচুর মানুষ। ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন এখনও অনেকে। ভূমিকম্প বিধ্বস্ত দুই দেশের পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। শুরু হয়েছে অপারেশন দোস্ত। পাঠানো হচ্ছে ত্রাণ সামগ্রী। হাত লাগানো হয়েছে উদ্ধার কাজে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তুরস্কে কাজ চালাচ্ছেন এনডিআরএফ কর্মীরা। ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্কে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এনডিআরএফ-এর চার এক্সপার্ট ল্যাব্রাডরকে। আর সেই বিশেষজ্ঞ সারমেয়রা যেন কোথাও কলকাতার সঙ্গে এক সুতোয় বেঁধে ফেলল তুরস্ককে।
কলকাতা থেকে তুরস্ক। দূরত্ব প্রায় পাঁচ হাজার কিলোমিটার। আর এই হাজার হাজার কিলোমিটারের দূরত্ব মুছে দিয়েছে জুলি-রোমিওরা। ওরা এনডিআরএফ-এর বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ল্যাব্রাডর। যেদিন কলকাতায় মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়েছিল, সেদিন জুলির বয়স ছিল মাত্র এক বছর। সেদিন ব্রিজের ধ্বংস্তস্তূপের নীচে কেউ চাপা পড়ে আছেন কি না, তার খোঁজ পেতে নিয়ে আসা হয়েছিল জুলিকে। জুলির সঙ্গে সেদিন এসেছিল রোমিও-ও। আর এখন জুলির বয়স সাত বছর। সে এখন কাজ করছে তুরস্কে। ভারতের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে। জুলি একা নয়, সঙ্গে রয়েছে তার আরও তিন বন্ধু। রোমিও, হানি, ব়্যাম্বো। ভূমিকম্পে তুরস্কের সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে এলাকাগুলি, তার মধ্যে একটি আন্তাকিয়া। সারা রাত ধরে সেখানে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এনডিআরএফ কর্মীরা। ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনও আটকে রয়েছেন বহু মানুষ।
ধ্বংসস্তূপের ভিতরে যেখানে উদ্ধারকর্মীরা পায়ে হেঁটে পৌঁছাতে পারছেন না, সেখানে পৌঁছে যাচ্ছে এনডিআরএফ-এর বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জুলি, রোমিওরা। চাপা পড়ে থাকা মানুষদের শুঁকে খুঁজে বের করার বিশেষ প্রশিক্ষণ রয়েছে ওদের। মানুষ ও মেশিন যেখানে পৌঁছাতে পারে না, সেখানে অনায়াসে পৌঁছে যায় ওরা। ধ্বংসস্তূপের ৫-৭ কিলোমিটার রেঞ্জের মধ্যে যদি প্রাণের সামান্যতম স্পন্দন পাওয়া যায়, তাহলে চিৎকার করে ডেকে ট্রেনারকে সতর্ক করে জুলি। জুলি একবার ডেকে উঠলে তৎপর হয় রোমিও। সেও তারপর নিশ্চিত করে যে সেখানে কেউ আটকে রয়েছে, যাঁর হৃদস্পন্দন চালু রয়েছে। এরপর বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা উদ্ধার করে আনেন ওই আটকে পড়া মানুষদের।